আনিস-কাণ্ডে রায় হাই কোর্টের। ফাইল চিত্র।
আনিস খান মামলায় রাজ্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর উপরই আস্থা রাখলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। চার মাস পর হাওড়ার ছাত্রনেতা আনিস খান হত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মান্থা জানান, সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই। আনিস মামলায় রাজ্য পুলিশের সিট-ই তদন্ত করবে। চার্জশিটও পেশ করবে সিট। অন্য দিকে, আনিসের বাবা জানান, ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করছেন তাঁরা।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আনিসের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার তদন্ত নামে রাজ্যের গঠন করা বিশেষ তদন্তকারী দল। যদিও আনিসের পরিবার বার বার জানায়, রাজ্য পুলিশের তদন্তের প্রতি তারা আস্থাশীল নয়। আনিসের বাবা সালেম খান হাই কোর্টে গিয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান। যদিও পুলিশি তদন্তের উপরই আস্থা রাখে কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু সময় যত এগিয়েছে, আদালতের প্রশ্নের মুখ পড়েছে পুলিশি তদন্ত।
এর আগে হাই কোর্টে রাজ্যের তরফে সওয়াল করা হয়, খুন কিংবা আত্মহত্যা নয়, হাওড়ার ছাত্রনেতার মৃত্যুকে ‘দুর্ঘটনা’ বলা যেতে পারে। তবে সেটা হয়েছে পুলিশের গাফিলতিতেই। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, ঘটনার দিন রাতে আনিস নিজেই, না কি পুলিশের ধাক্কায় ছাদ থেকে পড়ে যান, তার কোনও তথ্যপ্রমাণ নেই। তবে পুলিশের গাফিলতির ব্যাপারটা পরিষ্কার।
তবে সংশ্লিষ্ট শুনানি চলাকালীন আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, আনিস সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহের সূত্রপাত এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পাঠানো মোবাইল বার্তা থেকে। দ্বিতীয়ত, যেহেতু মূল অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধেই, তাই এর নেপথ্যে কোনও বড় ষড়যন্ত্র বা চক্রান্ত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলে আদালত। তৃতীয়ত, আনিসের ঘটনায় দেখা গিয়েছে, এক থানার মামলায় অন্য থানার পুলিশ গিয়েছে অভিযান চালাতে। সেই প্রক্রিয়াও ত্রুটিপূর্ণ বলা হয়। এই প্রেক্ষিতে আদালত জানিয়েছিল কোন পদমর্যাদার পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল ব্যাপার হল আঙুল উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধেই। এর আগের শুনানিতে এ নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য। হাই কোর্ট প্রশ্ন তোলে এর পরেও পুলিশের তদন্তে সাধারণ মানুষ বা অভিযুক্তের পরিবার আর বিশ্বাস রাখবে কি না।আনিসের পরিবারের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ ওয়েবসাইট আপলোড করা পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। সেটা দেখেই সিদ্ধান্ত নেব, ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করব কি না।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘প্রথম থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছি। সেই দাবিতেই আমরা অটল আছি।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।