—প্রতীকী ছবি।
সৎকারের জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে মৃত করোনা রোগীর পরিবারের কাছ থেকে চাপ দিয়ে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে হইচই পড়েছে এলাকায়। সেই সঙ্গে হাসপাতালে কী চিকিৎসা হয়েছে, তা নিয়েও অন্ধকারে মৃতের পরিবার।
পরিবার সূত্রে জানানো হয়, শনিবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল রোগীকে। রবিবার বিকেলে করোনা ধরা পড়ে। রাতে সাড়ে ৮টা নাগাদ বাড়ি থেকে আনা খাবার খেয়েছেন ওই ব্যক্তি। সাড়ে ১০টার সময় পরিবারের লোককে ডেকে জানানো হয় রোগীর অবস্থা ভাল নয়। সাড়ে ১১টার নাগাদ তিনি মারা যান। অভিযোগ, রাতেই মৃতদেহ পরিবারকে নিয়ে যেতে বলে হাসপাতালের লোকজন। করোনায় মৃত বলে পরিবার প্রথমে দেহ নিতে রাজি হয়নি। মৃতের স্ত্রীর দাবি, এর পর মৃতদেহ দাহ করতে চাইলে ৪ হাজার টাকা চাওয়া হয়। পরে সাড়ে তিন হাজারে রফা হয়। কিন্তু মৃত রোগীর দেহ ওয়ার্ড থেকে নামাতেই দুই ব্যক্তি আরও ১৮০০ টাকা নেন। ভোররাত ৩টের সময় দাহ করার শংসাপত্র নিতে যেতে বলা হয়। সেই সময় পরিবারের একজন সেটি আনতে গেলে তাঁকে জানানো হয়, ওই সময় শংসাপত্র মিলবে না, সকালে আসতে হবে। এ দিন সকালে গেলে দেখেন দেহ তখনও দাহ করার জন্য পাঠানো হয়নি। সাড়ে ৮টার পর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় অন্ত্যেষ্টির জন্য।
এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার অমিত দত্ত বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তবে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এমন হলে কড়া ব্যবস্থা হবে।’’ হাসপাতালে কোভিড রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, আইসোলেশন ওয়ার্ডে কোভিড রোগীদের অন্য রোগীদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে। সোমবার ১৩ জন কোভিড রোগী ছিলেন। এ দিন জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠকে ওই রোগীদের অন্য হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কোভিড ওয়ার্ড চালু করতে জেলাশাসকের কাছে প্রয়োজনীয় সাহায্য চাওয়া হয়েছে। অথচ এ দিন থেকে ৫০ শয্যার কোভিড ওয়ার্ড এই জেলা হাসপাতালে চালুর কথা জানিয়েছিলেন ওএসডি সুশান্ত রায়। কার্য ক্ষেত্রে তা হয়নি।
এ দিন শিলিগুড়িতে করোনার সংক্রমণ নিয়ে চিকিৎসাধীন আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি হাসপাতাল ছাড়া উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে এ দিন পাঁচ জন মারা গিয়েছে। শিলিগুড়ির প্রধাননগরের জ্যোতিনগর কলোনির বাসিন্দা ৭০ বছরের এক ব্যক্তি। চয়নপাড়ার বাসিন্দা ৭২ বছরের এক ব্যক্তি। ইসলামপুরের বাসিন্দা ৫৫ বছরের এক ব্যক্তি। শিলিগুড়ির তিলকরোডের বাসিন্দা ৪৮ বছরের অপর এক ব্যক্তি এ দিন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মারা যান। বাগডোগরার বাসিন্দা ৫৫ বছরের এক মহিলাও মারা গিয়েছেন এদিন।
শহরের একটি নার্সিংহোমে আরও দু’জন মারা গিয়েছেন। সেবক মোড়ের একটি নার্সিং হোমে মারা যান ৫২ বছরের এক আইনজীবী। রবিবার মেডিক্যাল কলেজ লাগোয়া এক নার্সিংহোমে মারা গিয়েছেন আরেক জন। ৩২ বছরের তিনি শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ারের কর্মী ছিলেন।