Siliguri

প্রাপ্তির ঝুলি শূন্য পর্যটনেও

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মন্ত্রকের বরাদ্দ বেড়েছে সামান্য।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৮
Share:

—ফাইল চিত্র।

পর্যটন শিল্পে দেশের মধ্যে প্রথম ১০টি রাজ্যের মধ্যে থেকেও কেন্দ্রীয় বাজেটে পশ্চিমবঙ্গের জন্য জোটেনি সুনির্দিষ্ট কোনও বরাদ্দ। রাজ্যের পর্যটন শিল্পে উত্তরবঙ্গ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবুও বাজেটে কোনও সুখবর আসেনি উত্তরবঙ্গের পর্যটনের জন্য। যার জেরে কেন্দ্রীয়

Advertisement

বাজেট নিয়ে হতাশ উত্তরবঙ্গের পর্যটন মহল। বঞ্চনার অভিযোগের সুরও শোনা গিয়েছে পর্যটন সংগঠনগুলির গলায়।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, মন্ত্রকের বরাদ্দ বেড়েছে সামান্য। ২১৮৯ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ২৫০০ কোটির মত। অন্য মন্ত্রকের তুলনায় তা খুবই নগণ্য। তেজস এক্সপ্রেস বা ১০০টি নতুন বিমানবন্দরের কথা বলা হলেও সেগুলির সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য নেই। রাজ্য তার মধ্যে থেকে কিছু পাবে কিনা স্পষ্ট নয় সেটিও। হিমালয়ান সার্কিট, দার্জিলিং-কালিম্পং, ডুয়ার্স, টয়ট্রেন-বাজেটে জায়গা পায়নি সেসব। বিশ্ববিখ্যাত একশৃঙ্গ গন্ডার বা হেরিটেজ স্থান রাজ্যের কোনও পর্যটন প্রকল্পই জায়গা পায়নি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর খাতায়। যা নিয়ে সরব হয়েছেন পর্যটন বিশেষজ্ঞরা।

Advertisement

অ্যাসোসিয়েশনের ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজ়মের (অ্যাক্ট) আহ্বায়ক রাজ বসু বলেন, ‘‘পর্যটন মানে শান্তি, পর্যটন মানে কর্মসংস্থান-অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এতেই তো বিনিয়োগের প্রয়োজন।’’ তিনি জানান, বিদেশি মুদ্রা আমদানিতে এই শিল্প অগ্রণী ভূমিকা নিচ্ছে। অথচ অর্থমন্ত্রীর বাজেটে উত্তরবঙ্গের পর্যটন বঞ্চিত।

কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকের তথ্য বলছে, বিদেশি পর্যটকদের আসার হিসাবে এ রাজ্য গোটা দেশে ৬ নম্বরে রয়েছে। গুজরাত, রাজস্থান বা মধ্যপ্রদেশেরও আগে। আন্তর্জাতিক চেকপয়েন্ট হিসাবে কলকাতা বিমানবন্দরও ছয় নম্বরে। রাজ্যের পর্যটন বৃদ্ধির হার প্রায় ৮ শতাংশ টপকে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গের জন্য যা আরও বেশি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘‘রাজ্যের মধ্যে উত্তরবঙ্গের পর্যটনই বিরাট অংশ জুড়ে রয়েছে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের যাত্রী সংখ্যা বছরে ৩০ লক্ষ ছাড়াতে চলায়, কয়েকশো কোটি টাকা দিয়ে নতুন বিমানবন্দর টার্মিনালের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ট্রেন এবং যাত্রী সংখ্যার বিচারে এনজেপি স্টেশনকে উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যতম মডেল স্টেশন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ সেই এলাকার চায়ের পরে মূল শিল্প পর্যটনের জন্য কিছুই ভাবা হল না।

হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল মনে করেন, এই বাজেট থেকে পর্যটন শিল্পের আপাতত পাওয়ার কিছুই নেই। তিনি জানান, বাজেটে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যকে সার্বিকভাবে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হল না। পরিকাঠামো থেকে নয়া প্রকল্প বা জিএসটি থেকে বরাদ্দ, উত্তরবঙ্গ-সহ রাজ্যের জন্য কিছুই নেই।

পাহাড়ের পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রকই উত্তরবঙ্গের হোম-স্টের উন্নতির জন্য কাজ শুরু করেছে। সেখানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক এরজন্য কি‌ছুই করল না।

কয়েক দশকের পেশাগত জীবনে এমন বাজেট দেখেননি বলেই জানিয়েছেন ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (এতোয়া) সম্পাদক সন্দীপন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘রেল বাজেট আলাদা হয় না বলেই ট্রেনের বি‌ষয়টি ঠিকঠাক জানা আর যায় না। বিমানের সমস্ত কিছু অস্পষ্ট। আর প্রকল্প বা বরাদ্দ তো বাদই দিলাম। এই বাজেট আমাদের শিল্পের জন্য অত্যন্ত হতাশার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement