প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শিয়ালের দৌরাত্ম্যে ঘুম উড়েছে এলাকার মানুষের। চাষের জমিতে লুকিয়ে থাকা শিয়ালের দলের আক্রমণের মুখে পড়ে কমপক্ষে ১৩ জন গ্রামবাসী গুরুতর জখম হয়েছেন। শুধু মানুষ নয়, শিয়ালের কবলে প্রাণ হারিয়েছে অনেক ছাগল-মুরগিও। শিয়ালের আতঙ্কে চিন্তিত মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর দু’নম্বর ব্লকের মশালদহ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাননপাড়া এলাকার মানুষজন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সাম্প্রতিক সময়ে এক দল শিয়াল প্রায়শই এলাকায় ঢুকে তাণ্ডব চালাচ্ছিল। অনেক বাড়ি থেকেই ছাগল-মুরগি টেনে নিয়ে যাচ্ছিল বলে খবর। তবে এ বার তাদের আক্রমণের শিকার হলেন গ্রামবাসী। গ্রামের এক আখের ক্ষেতে দিনের বেলায় চাষের কাজ করছিলেন কয়েক জন। সে সময় অতর্কিতেই তাঁদের উপর হামলা করে শিয়ালের দল। ভয়ে অনেকে পালাতে পারলেও বেশ কয়েক জন গুরুতর আহত হন।
আহতদের কারও চোখে, কারও আবার মুখে থাবা বসিয়েছে শিয়ালেরা। কামড় বসিয়েছে শরীরের অন্যান্য অংশেও। শিয়ালের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে মাথাও। গুরুতর জখম অবস্থায় ১৩ জন গ্রামবাসীকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। শিয়ালের উপদ্রবে প্রাণ ওষ্ঠাগত গ্রামবাসীদের। উঠছে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও। গ্রামবাসীদের দাবি, গ্রামে শিয়ালের দলের হানা নিয়ে বার বার বন দফতরকে জানিয়েও লাভ হয়নি। তারা যদি ঠিকঠাক পদক্ষেপ করত, তবে গ্রামবাসীদের এই দুর্ভোগ হত না।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী তাজমুল হোসেন। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন তিনি। কথা বলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গেও। তিনি জানান, এ বিষয় নিয়ে তিনি বনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। পাশেই অরণ্য রয়েছে। সেখান থেকেই শিয়ালের দল আসছে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্য দিকে, গ্রামে শিয়ালের হানার জন্য নির্বিচারে জঙ্গলের গাছ কাটাকেই দায়ী করছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, কোনও কিছু বিবেচনা না-করে যখন গাছ কাটা হচ্ছে তখন প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না। এর ফলে বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে শিয়ালের দল যাবে কোথায়? তাই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। সমগ্র ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।