উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়।
ফের বেতন-বহির্ভূত খাতে রাজ্যের তরফে বরাদ্দ পেল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বেতন-বহির্ভূত খাতে ত্রৈমাসিক খরচের যে চাহিদা, অক্টোবর–ডিসেম্বরের জন্য তার চেয়ে অনেক কম বরাদ্দ দেওয়ায় হইচই পড়েছিল। কারণ, অস্থায়ী কর্মীদের বেতন থেকে ল্যাবরেটরির সরঞ্জাম কেনার মতো নানা খরচ ওই টাকা থেকেই করতে হয়। রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে এ বার আরও অর্থ বরাদ্দ করা হল উত্তরবঙ্গের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়কে। তাতে এ বার কাজ করতে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ত্রৈমাসিক খরচের কিছুটা বরাদ্দ প্রথম দফায় ছাড়ার পরেই জানানো হয়েছিল, সে টাকা খরচের হিসাব দিতে পারলে আরও বরাদ্দ মিলবে। কিন্তু ‘খুশি মতো’ খরচ করা যাবে না। রাজ্য-রাজ্যপাল তথা আচার্যের সংঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আইনি খরচ করতে হয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দফতর তাকেই ‘খুশি মতো’ খরচ হিসাবে ইঙ্গিত দিয়েছিল বলে সংশ্লিষ্টদের অনেকে মনে করেন। সে খরচের বিষয় খতিয়ে দেখতে রাজ্য ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বুধবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়কে অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের খরচ হিসাবে আরও এক কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে ওই খাতে। তাদের ত্রৈমাসিক খরচ আড়াই কোটির মতো। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের তরফে সম্প্রতি তাদের ৮০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল। তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন বিভাগের খরচে রাশ টানার নির্দেশ দেন। পরিস্থিতির জেরে, কাটছাঁট করে বাজেটের ৩০ শতাংশ টাকা খরচের কথা বিভাগগুলোকে জানান কর্তৃপক্ষ। এ বার বাকি টাকা মেলায় সব মিলিয়ে অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের খরচের জন্য তাঁরা দু’কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা পেলেন। দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সরকারি নিয়মে নথিপত্র পেয়েছেন কর্তৃপক্ষ। টাকাও দু’-এক দিনে ঢুকে যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রৈমাসিক অন্তত ৩৫ লক্ষ টাকার মতো দরকার। অক্টোবর-ডিসেম্বর ত্রৈমাসিকের তাঁরা এর আগে কোনও টাকা পাননি। এ বার প্রথম পেলেন।
আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ খরচের ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ এখনও পাঠাতে পারেননি। বরাদ্দ পেতে ওই নথিপত্র পাঠানোর তোড়জোড় করছেন তাঁরা। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় অক্টোবর-ডিসেম্বরের জন্য এর আগে ১৫ লক্ষের মতো টাকা পেয়েছিল। তাদের আরও দাবি রয়েছে। ফের আর কোনও টাকা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাঁরা পাননি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। আগে কয়েক লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিগত ত্রৈমাসিকের জন্য আরও টাকা দরকার তাঁদেরও। তাঁরাও সেই টাকার অপেক্ষায় বলে জানান। মালদহে গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত খরচের জটিলতার জেরে তাদের কয়েক বছর বেতন-বহির্ভূত খাতের বরাদ্দ বন্ধ করা রয়েছে।
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত বলেন, ‘‘টাকা আসায় ব্যয় সঙ্কোচের বিষয়টি তুলে নেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।’’ দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবব্রত মিত্র বলেন, ‘‘আরও কিছু টাকা দরকার। উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হচ্ছে। আশা করি, তা পাব।’’