ভেঙেছে ঘর, উপড়েছে গাছ। বালুরঘাটে। নিজস্ব চিত্র।
কথায় আছে, কারও পৌষ মাস কারও সর্বনাশ। শুক্রবার রাতের ঝড়-বৃষ্টিতে গরম থেকে স্বস্তি মিললেও ক্ষতি হয়েছে আম, ধান, পাটের মতো বহু কাঁচা বাড়িরও। মালদহ ও দুই দিনাজপুরের বেশ কিছু এলাকা শনিবারও লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে। ফলে গরমের ছুটির শেষ দিনে কোথাও ৫০-৬০ শতাংশ, কোথাও আবার ১৫-২০ শতাংশ হাজিরা ছিল স্কুলে।
মালদহ ও দুই দিনাজপুরে তাপপ্রবাহ চলছিলই। জেলাগুলিতে তাপমাত্রার পারদ ছিল ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই। গরমে হাঁসফাঁস করছিলেন মানুষ। শুক্রবার রাত থেকেই ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। কোথাও আবার শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির সৌজন্যে তাপমাত্রা এখন তিন জেলাতেই ৩২ থেকে ৩৩ ডিগ্রির মধ্যে রয়েছে। তাপমাত্রার পারদ কমলেও মালদহের ইংরেজবাজার, পুরাতন মালদহ, হবিবপুর, গাজল, বামনগোলা, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর, বালুরঘাট, কুশমমন্ডি, উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চোপড়া, চাকুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। বহু গাছ উপড়ে গিয়ে বিদ্যুৎ পরিষেবা বিপর্যস্ত। পানীয় জলেরও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বালুরঘাট স্টেশন লাগোয়া গোবিন্দপুর এলাকায় বেশ কয়েক জনের বাড়ির চাল উড়ে যায়। আম, ধান, পাট, ভুট্টারও ক্ষতি হয়েছে। ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহের প্রচুর আম ঝড়ে পড়ে গিয়েছে বলে দাবি চাষিদের। মাঠে ধান, পাট নুয়ে পড়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, “প্রতিটি ব্লকের আধিকারিকদের ঝড়ে ক্ষয় ক্ষতির রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল, শুকনো খাবার বিলি করা হয়েছে।”
তাপমাত্রার প্রভাব পড়েছে তিন জেলার স্কুলেও। এ দিন সকালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অন্য দিনের তুলনায় পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম ছিল। মালদহ ও দক্ষিণ দিনাজপুরের হাই স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতি ছিল ৫০-৬০ শতাংশ। উত্তর দিনাজপুরে পড়ুয়াদের উপস্থিতি আরও কম ছিল। খারাপ আবহাওয়া এবং ছুটির আগে শেষ দিন হওয়ায় উপস্থিতি কম বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষের। বুনিয়াদপুর হাই স্কুলের ছাত্র অনীক সরকার বলেন, “বৃষ্টিতে গরম আর নেই। স্কুল বন্ধ না রেখে খুলে দেওয়া উচিত।”
তথ্য: অভিজিৎ সাহা, নীহার বিশ্বাস, অভিজিৎ পাল, মেহেদি হেদায়েতুল্লা