উপায়: কুশমণ্ডির পইনাল প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের ভ্রাম্যমাণ পাঠশালায় শিক্ষকেরা দূরত্ব বিধি মেনে ক্লাস করাচ্ছেন। নিজস্ব চিত্র।
লকডাউনে টানা স্কুল বন্ধ। তাতেও পড়াশোনায় ছেদ পড়েনি দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন পূর্বচক্রের চেঁচাই প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়া সোনালি ওঁরাও, অর্পিতা শীল বা সুমন বান্ডোদের। একই ভাবে পড়ছে গঙ্গারামপুর উত্তর চক্রের রায়পুর প্রাথমিক স্কুলের আমিনা খাতুন, সফিকুল রহমান, আব্দুল ওবাইদুল মিঁয়া ও উমে কুলসুম বা কুশমণ্ডি চক্রের পইনালা মহাগ্রাম প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা। কারণ শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ পাঠশালা নিয়ে।
জেলার তপন, হিলি, বালুরঘাট, গঙ্গারামপুর, কুমারগঞ্জ থেকে কুশমণ্ডি ব্লকের অন্তত ২০টি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকেরা দূরত্ববিধি মেনে পড়ুয়াদের কাছে গিয়ে ‘কর্মপত্র’ লেখানো থেকে শুরু করে পাঠ্যবই ধরে বাংলা, ইংরেজি, অঙ্ক ও পরিবেশ বিষয়ে পাঠদান করছেন। সঙ্গে চলছে শরীরচর্চা ও আঁকার ক্লাসও।
চেঁচাই প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক পবিত্র মোহান্ত, রায়পুরের শিক্ষক রাজনারায়ণ গোস্বামী, কুশমণ্ডির পইনালার সাজেদার রহমান বা বালুরঘাটের শিক্ষিকা মানসী অধিকারীদের মতো দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরহাটের ঠাকুরপুড়া, পতিরাম এফপি টু এবং হিলি সীমান্তের শ্যামপুর এফপি-র অন্তত ৪০ জন প্রাথমিক শিক্ষক নিজেদের স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য এমনই ভ্রাম্যমাণ পাঠশালা চালাচ্ছেন।
পবিত্র ও রাজনারায়ণ জানান, প্রত্যন্ত গ্রামের খুদে পড়ুয়াদের অনলাইন বা ফোনে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে পঠনপাঠনের মতো পরিকাঠামো নেই। ফলে মিড ডে মিলের খাদ্যসামগ্রীর সঙ্গে স্টাডি মেটেরিয়ালের (প্রশ্নপত্র) পাশাপাশি ওই শিক্ষকেরা নিজেরাও কর্মপত্র তৈরি করে পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। পড়ুয়ারা কী ভাবে তাতে লিখবে, তা-ও হাতেকলমে দেখিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।
দক্ষিণ দিনাজপুরে ‘শিক্ষা আলোচনা’ নামে সংগঠন চালু করে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় কী করে উন্নতি করা যায়, তা নিয়ে ওই শিক্ষকেরা সপ্তাহে এক দিন ভার্চুয়াল বৈঠক করে নানা কর্মসূচি ঠিক করছেন। সেই মতো পড়ুয়াদের পাঠদান করা হচ্ছে। শিক্ষকেরা আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পড়ুয়াদের ক্লাস করানো হচ্ছে।