—প্রতীকী ছবি
অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ প্রকল্পে অর্থসংগ্রহে এ বার বাড়ি বাড়ি ঘুরবেন সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা। সঙ্ঘ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার তথা গোটা উত্তরবঙ্গে ১২ লক্ষ পরিবারের কাছে পৌঁছবেন পঞ্চাশ হাজার স্বয়ংসেবক। রামমন্দির নিয়ে তৃণমূলের ভূমিকার কথাও তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে রামমন্দিরের ভূমিপুজোর দিন পশ্চিমবঙ্গে ‘লকডাউন’ করার কথাও মনে করিয়ে দেওয়া হবে সাধারণ মানুষকে। তাতে এক দিকে রামমন্দির স্থাপনের কৃতিত্ব যেমন বিজেপির দিকে থাকবে, তেমনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাধা হয়ে দাঁড়ানোর বিষয়ও সামনে আসবে। বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের বক্তব্য, বিধানসভা ভোটের আগে এই কর্মসূচি দলের পক্ষে সুবিধাজনক হতে পারে।
কোচবিহারে সঙ্ঘের প্রচারক সাধন পাল বলেন, ‘‘রামজন্মভুমি মন্দির নির্মাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে ওই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১৫ জনুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত তা চলবে।’’ সঙ্ঘের দাবি, ওই কর্মসূচির সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। বিজেপির কোচবিহার জেলার এক নেতা বলেন, “আমাদের অনেকেই সঙ্ঘের স্বয়ংসেবক। রামমন্দির নিয়ে আমরা সবাই যখন আনন্দে মেতেছি, সেই সময় তৃণমূল তাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। মানুষ তার জবাব দেবে বিধানসভা নির্বাচনে।’’
তৃণমূল অবশ্য দাবি করেছে, ধর্ম, মন্দির-মসজিদ নিয়ে রাজনীতি করে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে বিজেপির ভূমিকা সাধারণ মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তাই এমন প্রচারে বিজেপির কোনও লাভ হবে না। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা পার্টির চেয়ারম্যান বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, ‘‘ধর্ম নিয়ে রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মেনে নেবেন না। মানুষ ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে তার বিরোধিতা শুরু করেছে। আমরা মানুষের উন্নয়নের সঙ্গে রয়েছি। তাই এ সব নিয়ে আমরা চিন্তিত নই।”
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে ৮টি আসনের মধ্যে ৭টি গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে। উত্তরবঙ্গের ৫৪টি বিধানসভা আসনের মধ্যে লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে বেশিরভাগ আসনেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে খবর, তার পরেও বিজেপি স্বস্তিতে নেই। বিশেষ করে কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচনের ৫৪ হাজার ভোটের ব্যবধান মিটিয়ে জয় ছিনিয়ে নেয় রাজ্যের শাসকদল। তাই প্রচারে নানা ইস্যুকে গুরুত্ব দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
সঙ্ঘের অন্দরমহলের কানাঘুষো, রামমন্দির উত্তরবঙ্গে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। কিছুদিন ধরে সেই বিষয়টি কিছুটা ধামাচাপা পড়েছে। এ বার ওই কর্মসূচি ঘিরে নতুন করে মানুষের কাছে পৌঁছতে পারলে তা অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে বিজেপিকে। বিজেপিও মনে করছে, ১২ লক্ষ পরিবার মানে সরাসরি প্রায় এক কোটি মানুষের কাছে পৌঁছবেন স্বয়ংসেবকরা। তার জেরে সে সব পরিবার বিজেপির সঙ্গেই থাকবেন।