রামমন্দিরের ছবি নিয়ে মানুষের দুয়ারে সঙ্ঘের নেতা, কর্মীরা। মালদহের বামনগোলায়। নিজস্ব চিত্র।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিনে বাড়িতে জ্বালাতে হবে প্রদীপ, মালদহে এমনই বার্তা নিয়ে মানুষের কাছে ছুটছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)-এর কর্মীরা। রামমন্দিরের ছবি থেকে পুজোর নিয়মাবলিও বিলি করছেন সঙ্ঘের স্বয়ংসেবকেরা। তাঁদের দাবি, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিন সাধারণ মানুষকে নিজেদের বাড়িতে ‘অকাল দীপাবলি’ পালনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে সূত্রের দাবি, সঙ্ঘের রামমন্দির নিয়ে প্রচারে বিজেপির একাংশ ছোট, বড় ও মাঝারি নেতা, নেত্রীরা শামিল হওয়ায়, চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, বিজেপি নেতারা শামিল হওয়ায় ‘অস্বস্তিতে’ পড়তে হচ্ছে সঙ্ঘ পরিবারকে। রামমন্দির নিয়ে বিজেপির প্রচার, কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন রয়েছে। উদ্বোধনের দিন গ্রামের মন্দিরগুলিতে পুজোর বার্তা নিয়ে জেলায় প্রচার শুরু করেছেন আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা, কর্মীরা। সংগঠনের প্রচারক, সহ-প্রচারক, বিস্তারকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঁচটি করে প্রদীপ জ্বালানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে তাঁদের সঙ্গে বাড়ি বাড়িতে যাচ্ছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। বিজেপির দাবি, রাম মন্দির নিয়ে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো সংগঠন সামনে থাকবে। পিছনের সারিতে থাকবেন বিজেপির নেতা, নেত্রীরা। তবে সূত্রের দাবি, সঙ্ঘের সঙ্গে এক যোগে বিজেপি নেতা, নেত্রীরাও মাঠে নেমে পড়ায় ‘বিড়ম্বনায়’ সঙ্ঘ। সঙ্ঘের নেতাদের দাবি, রাজনৈতিক রং না দেখে মানুষের বাড়িতে রামমন্দির উদ্বোধনের আমন্ত্রণ পত্র পৌঁছনো হচ্ছে। ফলে, বিজেপির নেতৃত্ব সঙ্গে থাকলে গ্রামের সমস্ত বাড়িতে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে হোঁচট খেতে হবে।
যদিও প্রকাশ্যে মালদহ বিভাগের সঙ্ঘচালক পীযুষকান্তি সাহা বলেন, “জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬০০ গ্রামে পৌঁছনো হবে। সবার বাড়িতে রামমন্দিরের ছবি, পুজোর নিয়মাবলি, অক্ষত চাল নিয়ে আমরা পৌঁছচ্ছি। বাড়িতে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে কোনও রাজনৈতিক রং দেখা হচ্ছে না। আমাদের সঙ্গে যে কেউ থাকতে পারেন।” বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “বিজেপি নেতারা নিজেদের মতো করে মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছেন। সঙ্ঘ, সঙ্ঘের কাজ করছে।”
লোকসভা ভোটের আগে, বিজেপি রামমন্দিরকে সামনে রেখে প্রচার শুরু করেছে বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী। তিনি বলেন, “সমস্ত ধর্মকেই আমরা শ্রদ্ধা করি। তবে বিজেপির ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার গত দশ বছরে দেশের মানুষের জন্য কোনও কল্যাণকর কাজ করতে পারেনি। উল্টে, জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে মানুষের জীবন আরও যন্ত্রণাদায়ক করেছে। সে সব থেকে নজর ঘোরাতে, সঙ্ঘের আড়ালে বিজেপি রামমন্দিরকে সামনে রেখে ভোটের প্রচার করতে মরিয়া। তাতে কোনও লাভ হবে না।’’