দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
প্রতিমা বিসর্জন করতে গিয়ে আত্রেয়ী নদীতে ডুবে মৃত্যু হল এক জনের। নিখোঁজ আরও এক জন। তাঁর খোঁজে ডুবুরি এবং স্পিডবোট নামিয়ে তল্লাশি চলছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের একটি পরিবার দুর্গাপ্রতিমার বিসর্জন দিতে গিয়েছিল আত্রেয়ী নদীতে। নিরঞ্জনের পর প্রতিমার কাঠামো নদীর গভীরের দিকে ঠেলতে গিয়ে তিন জন তলিয়ে যান। এক জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও অংশু নন্দী এবং শ্যামল দত্ত নামে দু’জন জলের তোড়ে ভেসে যান। পরে ৬৫ বছরের শ্যামলকেও উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। তাঁকে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা বৃদ্ধকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্য দিকে, নদীতে তলিয়ে গিয়েছেন অংশু। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ওই যুবক অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত ছিলেন। পুজোয় ছুটি নিয়ে বাড়ি এসেছিলেন। ৩৫ বছরের যুবকের খোঁজ চলছে নদীতে। লক্ষ্মী হালদার নামে পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘প্রতিমা নিরঞ্জন এসে জলে তলিয়ে যায় তিন জন। দু’জনকে উদ্ধার করে বালুরঘাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এক জনের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের অংশুর এখনও খোঁজ মেলেনি।’’
প্রতক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, দুর্ঘটনা ঘটে দুপুর ৩টে নাগাদ। বালুরঘাট কাঁঠালপাড়ার সাহাবাড়ির প্রতিমা বিসর্জন হচ্ছিল। ওই পরিবারের সদস্যরা বন্ধুবান্ধব এবং আত্মীয়-স্বজন নিয়ে নদীতে এসেছিলেন। নিরঞ্জন করার সময় প্রতিমা জলের দিকে ঠেলতে গিয়ে তিন জন জলে তলিয়ে যেতে থাকেন। পরিবারের অন্য সদস্যেরা তাঁদের তুলে আনার চেষ্টা করেন। সেই সময় নৌকায় দু’-তিন জন ছিলেন। তাঁদের প্রচেষ্টায় দু’জনকে উদ্ধারও করা যায়। কিন্তু এক জনকে বাঁচানো যায়নি। আরও এক জনের এখনও খোঁজ মেলেনি।
বিসর্জনের জন্য আগাম সতর্কতা হিসাবে জেলা প্রশাসন ও পুরসভার তরফে স্পিডবোট, ডুবুরির ব্যবস্থা হয়েছে। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ-সহ দুর্যোগ মোকাবিলার কর্মীরা ছুটে গিয়েছেন। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র ওই দুর্ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন। তবে তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত রকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। আমরা বার বার সাবধান করেছি যে, প্রশাসনে অনুমতি ছাড়া অন্য কোনও ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন-না হয়। ওই ঘাটের স্রোত বেশি ছিল। যাঁরা সাঁতার জানেন না, তাঁরা জলে নেমেছিলেন বলে শুনেছি। দুঃখজনক ঘটনা। তবে স্পিডবোট, ডুবুরি নামিয়েছি। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।’’