ব্যাঙ্কে পুলিশ বাহিনী। —নিজস্ব চিত্র।
সাতসকালে ব্যাঙ্ক খুলতেই টাকা তোলার কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন তিন জন যুবক। সে সময় ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে ১৯ লক্ষ টাকা বার করে নিজের ঘরে রেখেছিলেন ম্যানেজার। অভিযোগ, প্রায় ফাঁকা ব্যাঙ্কে সেই টাকা নিয়ে চম্পট দেন ওই তিন ‘গ্রাহক’। মঙ্গলবার সকালে দিনহাটার উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কে ডাকাতির দীর্ঘ ক্ষণ পর পুলিশ ব্যাঙ্কে পৌঁছলে ঘটনার কথা জানতে পারেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। এই ঘটনায় ব্যাঙ্কের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। ডাকাতির তদন্তে নেমেছে দিনহাটা থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতি দিনের মতো মঙ্গলবারও সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ নিগমনগর এলাকার ওই ব্যাঙ্কটি খুলেছিল। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অরিজিৎ ভৌমিক এবং ক্যাশিয়ার আতারুল রহমান জানিয়েছেন, সকালের দিকে ব্যাঙ্কে কোনও গ্রাহক ছিলেন না। সে সময় মোটরবাইকে করে তিন জন মাস্ক পরা যুবক ব্যাঙ্কে আসেন। এর পর টাকা তোলার কাউন্টারে দাঁড়ান তাঁরা। টাকা তোলার স্লিপও জমা দেন। ক্যাশিয়ারের দাবি, সে সময় তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাঙ্কের ভল্ট থেকে ১৯ লক্ষ টাকা বার করে নিজের কেবিনের টেবিলে রেখেছিলেন ম্যানেজার। ফের টাকা বার করার জন্য ব্যাঙ্কের ভল্টে ঢুকেছিলেন তাঁরা। সে সময় ভল্টের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দেন ওই তিন যুবক। চিৎকার-চেঁচামেচির পর দরজা খোলা হলে ম্যানেজার নিজের কেবিনে ফিরে এসে দেখেন ১৯ লক্ষ টাকা গায়েব! ওই তিন যুবকও বাইক নিয়ে বেপাত্তা।
নিগমনগর এলাকায় ওই ব্যাঙ্কটির যে বাড়ির উপরে তাঁর মালিক সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সকালে বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিলাম। ফিরে এসে শুনি ব্যাঙ্কে ডাকাতি হয়েছে। সকালে ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার আতারুল এসেছিলেন। সকাল ১১টা নাগাদ দু’তিন জন যুবক এসে ১৯ লক্ষ টাকা নিয়ে যান বলে শুনেছি।’’
মঙ্গলবার ঘটনার তদন্তে দিনহাটা থানার আইসি-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী ওই ব্যাঙ্কে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যাঙ্কে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। ফলে দুষ্কৃতীদের কাজ আরও সহজ হয়ে গিয়েছে। কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা বাইরে থেকে ভল্টের দরজা বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ। পাঁচ মিনিট পরে ব্যাঙ্কের অস্থায়ী কর্মী চন্দ্রশেখর বর্মণ দরজা খুলে ম্যানেজার এবং ক্যাশিয়ারকে বাইরে বার করেন বলে দাবি। সন্দেহের বিষয় হচ্ছে যে ডাকাতির ঘটনায় ব্যাঙ্কের অন্য কর্মীরা কোনও হইচই করেননি বা অ্যালার্ম বাজাননি। তদন্ত শুরু হয়েছে। আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি।’’