TMC

TMC: ইট-পাটকেল নিয়ে তাল ঠোকাঠুকি জোড়াফুলের দুই গোষ্ঠীর, আচমকা বোমাবাজি দুবরাজপুরে

জোড়াফুল শিবিরের একটি অংশের মতে, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মুকুল মণ্ডল এবং কার্যকরী সভাপতি তরুণ গড়াইয়ের গোষ্ঠীর মধ্যে ওই সংঘর্ষ বাধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২১ ১৫:১৯
Share:

এমনই সংঘর্ষের ছবি মঙ্গলবার দেখা গেল বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের পদুমা পঞ্চায়েতের গাঁড়া গ্রামে। —নিজস্ব চিত্র

হাতে লাঠি এবং ইট-পাটকেল নিয়ে তাল ঠুকছে দু’পক্ষ। চলছে একে অপরের বিরুদ্ধে হুঙ্কার। আচমকা দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হল ইট ছোড়াছুড়ি। শেষ পর্যন্ত তা গড়াল বোমাবাজিতে। বীরভূমের দুবরাজপুর ব্লকের পদুমা পঞ্চায়েতের গাঁড়া গ্রামে এমনই রণমূর্তি ধারণ করতে দেখা গেল দু’পক্ষকে। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই এই সংঘর্ষ বলে অভিযোগ উঠেছে। যুযুধান দু’পক্ষ তৃণমূল বলে মেনে নিয়েছেন দলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে এর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই বলেই জানিয়েছেন তিনি। যদিও সংঘর্ষ নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিজেপি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে বোমাবাজি শুরু হয় মঙ্গলবার। জোড়াফুল শিবিরের একটি অংশের মতে, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মুকুল মণ্ডল এবং কার্যকরী সভাপতি তরুণ গড়াইয়ের গোষ্ঠীর মধ্যে ওই সংঘর্ষ বাধে। ইটের ঘায়ে বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন। তাঁদের দুবরাজপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মঙ্গলবার দুবরাজপুর ব্লক অফিস থেকে গ্রামে সমীক্ষা করতে যান সরকারি আধিকারিকরা। তাঁরা মুকুল গোষ্ঠীর অন্যতম নেতা তথা ওই এলাকার বুথ সভাপতি গফ্ফর খানের বাড়ির পাশে সমীক্ষা করতে শুরু করেন। সেই সময় তরুণ গোষ্ঠীর লোকজন তাঁদের এলাকায় কখন সমীক্ষা হবে, তা জিজ্ঞাসা করতে যান। এ নিয়েই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় বচসা। শেষ পর্যন্ত সেই বচসা গড়ায় সংঘর্ষে। প্রথমে ইট বৃষ্টি শুরু করে দু’পক্ষ। এর মাঝেই শুরু হয় বোমাবাজি। গুলি চলে বলেও অভিযোগ। ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘ওই কাণ্ডে ইতিমধ্যেই সাত জনকে আটক করা হয়েছে। গ্রামে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ ঘটনাস্থল থেকে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং দু’রাউন্ড গুলিও মিলেছে।

Advertisement

দুবরাজপুরের বিডিও রাজা আদক বলেন, ‘‘সোশ্যাল অডিট টিম এলাকায় সার্ভে করছিল। তখন দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। সরকারি কর্মীরা এর পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান। তাঁরা নিরাপদে আছেন। ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণেই আছে। পুলিশও কড়া নজরদারি চালাচ্ছে। আমরা পুলিশ এবং পঞ্চায়েতের মাধ্যমে খবর নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। সোশ্যাল অডিট টিম কী রিপোর্ট দেয় তা দেখি। তার পর বলা যাবে দুর্নীতি হয়েছিল কি না।’’

বিষয়টি নিয়ে দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। পঞ্চায়েতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সেই কারণেই ওই সংঘর্ষ। কী ভাবে বোমা এবং আগ্নেয়াস্ত্র পেল ওরা? ওরা দুবরাজপুরে শান্তির বাতাবরণ নষ্ট করছে।’’

অনুব্রত অবশ্য বলেন, ‘‘ফুটবল খেলার মাঠ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল হয়েছে। এই সমস্যা আজকের নয়। এর আগে ২০০৯ এবং ২০১২ সালেও হয়েছিল। এ বারও হয়েছে। আজ বিএলআরও অফিস থেকে লোকজন মাপজোক করতে গিয়েছিল। তখন গন্ডগোল হয়। দু’পক্ষই তৃণমূল। কিন্তু এটা সম্পত্তির ব্যাপার। আমাদের কিছু করার নেই। তবু দেখছি। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement