বিপাকে: উপরে, পাড় ভাঙছে তোর্সা। নীচে, বাঁধেই আশ্রয়। বুধবার কোচবিহারে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
সমতলে টানা বৃষ্টি চলছিলই। সেইসঙ্গে পাহাড়েও প্রবল বৃষ্টির জেরে বুধবার আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন নদী ফুঁসতে শুরু করায় দুশ্চিন্তা বাড়ছে জেলার বিভিন্ন জায়গায়। সকালের দিকে শহর সংলগ্ন কালজানি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করে। বাড়তে থাকে তোর্সা ও রায়ডাক-সহ একাধিক নদীর জল। তবে সন্ধ্যায় অবশ্য জেলার সব নদীর জলই বিপদসীমার নীচে রয়েছে বলে সেচ দফতরের তরফে জানানো হয়। এরইমধ্যে বেশ কয়েকটি নদীতে ভাঙন শুরু হওয়াতেও জেলার বেশ কিছু জায়গায় চিন্তা বাড়তে শুরু করেছে।
গত কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি চলছে আলিপুরদুয়ারে। প্রবল বৃষ্টির জেরে মঙ্গলবার সকালে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা ফের একবার জলমগ্ন হয়ে পড়ে। তবে বেলার দিকে বৃষ্টির গতি কিছুটা অবশ্য কমে। কিন্তু সেচ দফতর সূত্রের খবর, রাত হতেই পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। ফলে ভোররাত থেকেই জেলার বিভিন্ন নদীর জল বাড়তে শুরু করে। বেলা ১০টা নাগাদ শহর সংলগ্ন কালজানি নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইতে শুরু করায় সেখানে হলুদ সঙ্কেত জারি করা হয়। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ আগে সেই সঙ্কেত তুলে নেওয়া হয় বলে সেচ দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, বুধবার পাহাড়ে বৃষ্টি খানিকটা কমে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে কালজানি-সহ জেলার সব নদীর জলই বিপদসীমার নীচে বইছে।
চর তোর্সা নদীর ডাইভার্সনের উপর দিয়ে জল বইতে শুরু করায় বুধবার সকাল থেকেই ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ারের মধ্যে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থায় বিভিন্ন যানবাহন কোচবিহার ঘুরে যাতায়াত করে। এ দিকে, সমতলে খুব বেশি বৃষ্টি না হলেও, বুধবারও অবশ্য দুর্ভোগ জারি থাকে আলিপুরদুয়ারে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারের জমা জল সব জায়গা থেকে নামার আগেই কালজানির জল ফুলেফেঁপে উঠতে শুরু করে। ফলে বন্ধ করে দেওয়া হয় শহরের বিভিন্ন স্ল্যুইসগেট। যার জেরে বুধবার সকালেও আলিপুরদুয়ার শহরের কয়েকটি ওয়ার্ডে, বিশেষ করে নিচু এলাকার অনেক জায়গাতেই জল দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যা নিয়ে এ দিনও বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ দেখা দেয়। যদিও পুরকর্তাদের দাবি, শহরের সব এলাকা থেকেই জল নেমে গিয়েছে।
এ দিকে, আলিপুরদুয়ার জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে নদী ভাঙন নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে। মুজনাই ছাড়াও বিরকিটি ও ডুডুয়া নদীতে ভাঙন চলছে। বেশ কয়েকটি পরিবারকে ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে কালচিনিতে পানা ও বাসরা নদীতে ভাঙন শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার প্রিয়ম গোস্বামী অবশ্য বলেন, ‘‘যেখানেই ভাঙন হচ্ছে দ্রুত তা ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’’