অসহায়: দাদুর কোলে বাড়ি ফিরছে রীতেশ। নিজস্ব চিত্র।
ছোট থেকেই দাদুর বাড়িতে বড় হয়েছে রীতেশ। আট বছরের এই শিশুকে শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ির এক নার্সিংহোম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দাদু কামেশ্বর সিংহ ও দিদা সীতা সিংহ রীতেশকে ওদলাবাড়ি দেবীপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান। রীতেশের কিন্তু একই কথা বলছে, ‘‘আমাদের বাড়িতে নিয়ে চলো। বাবা, মায়ের কাছে যাব।" দাদুর বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে রীতেশদের বাড়ি।
রীতেশের মামা অজয় সিংহ বলেন, ‘‘আমাদের বাড়িতেই বেশি থাকত রীতেশ। এখনও ওকে বলা হয়নি যে বাবা-মা আর বেঁচে নেই। কীভাবে বলব, ভেবে পাচ্ছি না।’’
ধূপগুড়ির দুর্ঘটনায় রীতেশের বাবা রাজেশ মিশ্র, মা রেনু- সহ পরিবারের ৬ জনের মৃত্যু হয়। সে সব কছুই জানে না সে। স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রীতেশকে সান্ত্বনা দিচ্ছে তার খুড়তুতো দিদি বছর দশেকের রিঙ্কি। এই দুর্ঘটনায় রিঙ্কি হারিয়েছে মা ও দুই দিদিকে। রিঙ্কি বুঝে গিয়েছে, তার মা ও দিদিরা আর ফিরবে না। রীতেশের মা বাবাও যে আর ফিরে আসবে না, তা-ও বুঝতে পেরেছে রিঙ্কি। তবুও ভাইকে সান্ত্বনা দিচ্ছে সে। বলছে, ‘‘বড়রা ভাইকে সত্যিটা বলতে বারণ করেছেন। আমি বলব না। জানি তো আমি আমার আর ভাইয়ের অবস্থা এখন একই রকম।’’
চূড়াভান্ডারের দুলালি রায় শুক্রবারও মাঝে মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। তাঁর দুই ছেলে ও স্বামীর মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। দুলালির কাকা জয়দেব রায় বলেন, ‘‘দুলালি মনে হচ্ছে পাগল হয়ে যাবে। কিছুতেই তো ওকে বোঝাতে পারছি না আমরা।’’
এই দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এবং জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চার জনের চিকিৎসা চলছে। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু'জনের চিকিৎসা চলছে।