প্রতীকী ছবি।
এক দিকে, চলছে শিক্ষাকর্মীদের টানা কর্মবিরতি। এরই মধ্যে ইস্তফা দিয়েছেন উপাচার্য। ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যত লাটে উঠেছে পঠন-পাঠন। কাজ না হওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। ফলে ক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক না হলে আগামী দিনে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা হবে। আর এক দিকে বিকাশ ভবনের তরফে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরেরই কাউকে উপাচার্য পদে বসানো হচ্ছে।
টানা ১২ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে পোস্টার, ফ্লেক্স ঝোলানোর পাশাপাশি মিছিল, অবস্থান বিক্ষোভ চলছে তাঁদের। তালা বন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন বিভাগ। আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের দাবি, ২০০৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। স্থায়ী কর্মীদের থেকে অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা বেশি। অস্থায়ী কর্মীরাই যাবতীয় কাজকর্ম করেন। অথচ, সরকারি সুযোগ সুবিধা মিলছে না বলে তাঁদের দাবি। সারা বাংলা শিক্ষাবন্ধু সমিতির গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শুভায়ু দাস বলেন, ‘‘সরকার অস্থায়ী কর্মীদের জন্য নানা সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। অথচ, আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক উপাচার্যের বদল হলেও আমাদের সুরাহা হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।’’
শিক্ষাকর্মীদের কর্মবিরতির মধ্যেই কলকাতায় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাগত সেন। সম্প্রতি, মালদহে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্নাতক স্তরে ভর্তি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। সেই সময় উপাচার্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তর্ক করে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। যা দেখে হতবাক হন প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির থাকা প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। সেই বৈঠকের সাত দিন পরেই ইস্তফা দেন স্বাগত। আর তাতেই তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সুতপা দাস বলেন, “কোনও কাজ হচ্ছে না। কর্মীরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। উপাচার্যও নেই। পড়াশোনাও ঠিক মতো হচ্ছে না।” গ্রন্থালয় বন্ধ থাকায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, “স্নাতকোত্তর স্তরে গ্রন্থালয়ের বইয়ের উপরে বেশি নির্ভর করতে হয়। আন্দোলনে তাও বন্ধ। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক ছন্দে কবে ফিরবে সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।”
গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি বলেন, “পঠন-পাঠন স্বাভাবিক রয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি দাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছে।”