Doctor

টানা ৭ দিন ডিউটি, ইস্তফা

চিকিৎসকদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসনও। তাদের দাবি, চিকিৎসকেরা ঠিকমতো রাউন্ডে যাচ্ছেন না।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৩:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

রোগী দেখা শুরু হবে সকাল আটটা থেকে। টানা সাত দিন ২৪ ঘণ্টা ধরে চলবে সেই ‘ডিউটি’। এবং তা শেষ হবে অষ্টম দিন সকাল আটটায়। ৬ জুন থেকে মোট ৬ সপ্তাহের জন্য এমনই কাজের তালিকা বা ডিউটি রোস্টার প্রকাশ করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জলপাইগুড়ি কোভিড ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ৬ জন চিকিৎসক পড়ছেন এই রুটিনের আওতায়। স্বাস্থ্য দফতরের রোস্টারটিতে আরও লেখা আছে, ওই সাত দিন ২৪ ঘণ্টা করে হাসপাতালে থাকে সব রোগীকে একাই দেখবেন দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক। এই কাজের তালিকাকে ‘অমানবিক’ বলে দাবি করে ৬ জন চিকিৎসক প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছিলেন স্বাস্থ্য প্রশাসনকে। চিকিৎসকদের অভিযোগ, এর পরেই তাঁদের এক জনকে মালবাজারে বদলি করে দেওয়া হয়। ওই বিভাগের আরেক জন ডাক্তার চলতি সপ্তাহে ইস্তফা দিয়েছেন। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, অমানবিক চাপ নিতে না পেরে অনেকেই কাজ ছাড়তে চাইছেন।

Advertisement

চিকিৎসকদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে পাল্টা অভিযোগ জানিয়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসনও। তাদের দাবি, চিকিৎসকেরা ঠিকমতো রাউন্ডে যাচ্ছেন না। তাই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে হচ্ছে, দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “৬ জন ফিজিশিয়ানকে দিয়ে চালাতে হচ্ছে। সেই মতো কাজের তাবিকা করে দেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা সঠিক ভাবে রাউন্ডে যাচ্ছেন না বা রোগী দেখছেন না বলেও অভিযোগ। তাই রোগীদেরও ক্ষোভ বাড়ছে। তা ছাড়া, ২৪ ঘণ্টা ডিউটি মানে সর্বক্ষণই হাসপাতালে থাকতে হবে এমন নয়।”

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও কিছু ক্ষেত্রে সাত দিন করে টানা রোগী দেখার ভার থাকে। তবে রোজ বারো ঘণ্টা করে ডিউটি। জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ২৪ ঘণ্টাই রোগী দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা-ও একা। কোভিড হাসপাতাল বা সুপার স্পেশালাটি হাসপাতালের রোগীদের একজন ফিডিশিয়ানকে টানা আটদিন ধরে দিন-রাত একাই সামলাতে হচ্ছে বলে দাবি। এক ডাক্তারের কথায়, “এটা কোনও মানুষের পক্ষে সম্ভব?”

Advertisement

সূত্রের খবর, যে চিকিৎসক ইস্তফা দিয়েছেন রোস্টার অনুযায়ী তাঁর কোভিড হাসপাতালে ডিউটি শুরু হয়েছিল ৭ জুন সকাল আটটায়, শেষ হয় ১৪ জুন সকাল আটটায়। ফের ৫ জুলাই থেকে টানা ডিউটি করতে হয় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এর পর ফের তাঁকে কোভিড হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হয় বলে খবর। মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক সৌমেন সাহা বলেন, “উচ্চ শিক্ষার জন্য হাসপাতাল থেকে অব্যাহতি চেয়েছি। তা হয়ে গেলে ফেরার ইচ্ছে আছে।’’ টানা ডিউটির চাপের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমি কিছু বলছি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement