মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ, মঙ্গলবার দুপুরে শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি সুযোগসুবিধা বিলির সভা। গত কয়েকদিন থেকেই পুলিশ, প্রশাসন ও পুরসভার প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। শিলিগুড়ি প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্প ছাড়াও, এ দিন চাষিদের জন্য প্রকল্পভিত্তিক টাকা বিলি করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। দেওয়া হবে চাষিদের ট্রাক্টর-সহ একাধিক সরঞ্জাম। ঘোষণা হতে পারে নতুন প্রকল্পের।
এর আগেও স্টেডিয়ামের মাঠে সভা করেছেন মমতা। মাঠ খুঁড়ে লোহার স্তম্ভ-সহ একাধিক খুঁটি বসানোকে ঘিরে শহরের ক্রীড়াপ্রেমী থেকে সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে ক্ষোভও রয়েছে। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভা সেরে কলকাতা ফেরার কথা রয়েছে। একাধিক প্রকল্পের ঘোষণা, শিলান্যাস এবং উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রী করবেন। কৃষি থেকে কৃষকভাইদের নানা সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, বেলা ১২টার পরেই সভার কাজ সরকারি ভাবে চালু হয়ে যাবে। মুখ্যমন্ত্রী দুপুর ১টা নাগাদ মাঠে পৌঁছে যেতে পারেন। কারণ, দুপুর আড়াইটে নাগাদ স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে তাঁর বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে বিমানে কলকাতা ফেরার কথা।
মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসারেরা চাইছেন, শীতের বিকেলে যতটা সম্ভব সন্ধ্যার আগেই কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর বিমান অবতরণ করুক। তাই ঘন্টা দেড়েকের মধ্যে সভার কাজ শেষ হতে পারে। সোমবারই বিকেলে হেলিকপ্টারে ডুয়ার্সের বানারহাট থেকে সভা সেরে মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ি চলে আসেন। ‘উত্তরকন্যা’-সংলগ্ন এলাকায় হেলিকপ্টার নামার পর তিনি ‘উত্তরকন্যা’য় যান। রাতে মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার অতিথি নিবাস ‘কন্যাশ্রী’তে থাকছেন।
গত ৬ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে এসেছেন। কার্শিয়াঙে মন্টিভিয়ট মাঠে তিনি সরকারি সভা করে পাহাড়ের জিটিএ-র জন্য একাধিক ঘোষণা করেন। বিশেষ করে শিক্ষক নিয়োগ, সরকারি কর্মীদের সুযোগ-সুবিধা, জিটিএ-কে তহবিল প্রদান ছাড়াও একাধিক সরকারি সুযোগ-সুবিধা বিলিও করেন। চা শ্রমিকদের জন্য পাট্টাও ঘোষণা করেছেন। এ বার দার্জিলিং জেলার সমতল শিলিগুড়ি থেকে লোকসভাকে মাথায় তিনি কী বার্তা দেন, দলের নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে শহরবাসীর একাংশ অপেক্ষা করছেন। এ দিনও রাত
অবধি স্টেডিয়ামের মাঠ পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা দফায় দফায় ঘুরে দেখেন।
দলের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, বার বার কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের মাঠ খুঁড়ে সভা করাটা শহরের বড় অংশের মানুষ ভাল ভাবে দেখছেন না। তাঁরা মনে করছেন, কোনও সময় যুবভারতী বা ইডেনের মতো মাঠে এমনটা করা হয় না। শিলিগুড়িতে বাঘাযতীন পার্ক, তরাই স্কুল-হিন্দি স্কুল মাঠ, সূর্যনগর মাঠ, কাওয়াখালির মাঠ, বাগডোগরার উত্তরার মাঠ বা চম্পাসারিতে ইন্দিরা গান্ধী ময়দানের মতো বহু মাঠ রয়েছে। সেখানে সভা আগেও হয়েছে। তার উপরে শহরের দাবি মেনে সরকার আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী কোনও বার্তা দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।