কেন্দ্রীয় গবেষণাগারটি পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বা,ভেষজ উদ্ভিদের উপর কিংবা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার উপর হতে পারে। —ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গে দীর্ঘ দিন কর্মসূত্রে থাকার সুবাদে একটা বিষয় বুঝতে পারি। সেটা হল, এখানকার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন পার্থক্যের মধ্যে অন্যতম একটি হল, এ অঞ্চলে কোনও কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান গবেষণাগার নেই। অথচ, আমাদের ছাত্রছাত্রীরাই বিশ্বের তাবড় তাবড় গবেষনাগারে গবেষণারত বা বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত। ভারতের অন্য রাজ্যে একাধিক শহরে এ ধরনের গবেষণা প্রতিষ্ঠান একাধিক রয়েছে। কিন্তু আমাদের রাজ্যে কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন এলাকা ছাড়া রাজ্যের উত্তর অংশে এমন গবেষণা প্রতিষ্ঠান একটিও নেই। সেই কেন্দ্রীয় গবেষণাগারটি পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বা,ভেষজ উদ্ভিদের উপর কিংবা বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার উপর হতে পারে। উত্তরবঙ্গ থেকে নবনির্বাচিত সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। যেহেতু তিনি উত্তরবঙ্গের মানুষ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন, তাই মাননীয় মন্ত্রীকে এ বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করতে অনুরোধ জানাচ্ছি। মন্ত্রী নিজেই উদ্ভিদবিদ্যার এক জন অধ্যাপক ও নিজেও অনেক ছাত্রের গবেষণা সংক্রান্ত ‘গাইড’ ছিলেন। তিনিও জানেন, একটি কেন্দ্রীয় গবেষণাগার শুধুমাত্র বিজ্ঞানীর কর্মসংস্থান করে না, অন্য বিভিন্ন মানের মানুষের চাকরির সন্ধানও দিতে পারে। মন্ত্রীমশাইর কাছে আর একটি অনুরোধ। একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের ব্যাপারেও উদ্যোগী হতে অনুরোধ জানাই তাঁকে। সাধারণ ছাত্রছাত্রী, গবেষণারত ছাত্রছাত্রী ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কাজেও এটি সাহায্য করবে। কলকাতার বুকে জাতীয় গ্রন্থাগার রয়েছে। রয়েছে এশিয়াটিক সোসাইটির মতো জাতীয় স্তরের গ্রন্থাগার, কেন্দ্রীয় রাশিবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানের গ্রন্থাগার, ব্রিটিশ কাউন্সিলের গ্রন্থাগার ইত্যাদি। কিন্তু, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য স্তরের কোনও বড় গ্রন্থাগারই এত বড় অঞ্চলে নেই।
উত্তরবঙ্গের অনেক দিনের দাবি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার কথাও এখানে উল্লেখ করব। এই দাবিগুলো নিয়ে বাংলার বাকি সাংসদেরাও সরব হলে পূরণ হবে বলে আশা রাখতে পারি। রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকাও এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন। উত্তরবঙ্গের বিদ্বজ্জনেদেরও এ ব্যাপারে সমর্থন থাকবে বলে আশা। এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গের বুকে একটি ‘এমস’-এর প্রয়োজনীয়তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। সবাই এটা চান। রাজ্য সরকারের ঊদ্যোগে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে অনেক ছাত্রছাত্রীর আশা পূরণ হয়।
(প্রাক্তন শিক্ষক, জলপাইগুড়ি জিলা স্কুল)