ক্ষুব্ধ: রাস্তা নিয়ে চলছে আন্দোলন। নিজস্ব চিত্র
কৃষি বাস্তু সংগ্রাম সমিতি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম সমিতির আন্দোলন চলছিলই। এর পাশাপাশি এ বার আসরে নামল ভারতীয় কৃষাণ সঙ্ঘ। ফলে ফের একবার বন্ধ হয়ে গেল চার লেনের রাস্তা তৈরির কাজ। যার জেরে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকে ফের প্রশ্নের মুখে মহাসড়কের ভবিষ্যৎ। সেই সঙ্গে গোটা বিষয়টিতে লেগে গেল রাজনীতির রংও।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ার জেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩২ কিলোমিটার মহাসড়ক তৈরির কাজ হবে। যার মধ্যে ফালাকাটা থেকে সোনাপুর হয়ে ঘরঘরিয়া পর্যন্ত রয়েছে ২২ কিলোমিটার রাস্তা। বাকি ১০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হওয়ার কথা আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের শোভাগঞ্জ থেকে সলসলাবাড়ি পর্যন্ত। কিন্তু আলিপুরদুয়ার জেলায় মহাসড়ক নিয়ে যাবতীয় সমস্যা চলছে ২ নম্বর ব্লকেই। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রায় দু’বছর আগে এই ব্লকে কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু উপয়ুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবিতে শুরুতেই সেই কাজ আটকে যায়। তার পরে মাঝের এই সময়ে একাধিক বার এলাকায় কাজ শুরুর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। এরই মধ্যে হাইকোর্টের অন্তবর্তী নির্দেশের পরে বিশাল পুলিশ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবার চাপড়েরপাড় ও সলসলাবাড়িতে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়।
কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, প্রথম দু’দিন নির্বিঘ্নে কাজ হলেও, তার পর থেকেই ফের বাধা আসতে শুরু করে। এরই মধ্যে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্দোলনে নামে ভারতীয় কৃষাণ সঙ্ঘ। ফলে এক এক করে ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় কাজ বন্ধ হতে শুরু করে। এই কাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার সংস্থার প্রোজেক্ট হেড সমীরণ ঘোষ জানান, ‘‘মঙ্গলবার পুলিশের উপস্থিতিতে সলসলাবাড়িতে মাটি পরীক্ষার কাজ হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সেখানে আর কাজ করা যায়নি। ফলে আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকে গোটা কাজই এই মুহূর্তে বন্ধ হয়ে গেল।’’
জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের তরফে প্রোজেক্ট ডিরেক্টর সঞ্জীব শর্মা বলেন, ‘‘বিষয়টি জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাদের জানানো হয়েছে।’’
জমির উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবিতে ভারতীয় কৃষাণ সঙ্ঘ আন্দোলনে নামতেই তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে কাজিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামীর অভিযোগ, ‘‘আসলে বিজেপি ও আরএসএস এখন উন্নয়নের কাজ স্তব্ধ করে দিয়েও আলিপুরদুয়ারে অশান্তি করতে চায়। তাই ওই সংগঠনটিকে মাঠে নামিয়েছে তাঁরা।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা পাল্টা বলেন, ভারতীয় কৃষাণ সঙ্ঘে সঙ্গে বিজেপি বা আরএসএসের সম্পর্ক নেই। তবে সঙ্ঘের এক জেলা প্রচারকের দাবি, এ দিন সংগঠনের সদস্যরা জমি আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন।
এ দিন সলাসলাবাড়িতে ভারতীয় কৃষাণ সঙ্ঘের ব্যানার দেখা গেলেও কৃষি বাস্তু সংগ্রাম সমিতির কোনও ব্যানার অবশ্য দেখা যায়নি। সমিতির সভাপতি রাখালচন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘‘আমাদের সমিতি এখন সঙ্ঘের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে।’’