—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
‘লড়াই শুরু আজ থেকে’, ২০১৬ সালের এসএসসি-তে নিয়োগ মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ সোমবার শুনে এমনটাই দাবি করলেন জলপাইগুড়ি শহরের রাজবাড়িতে জড়ো হওয়া চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন সকাল থেকে শুরু হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের অপেক্ষা। দিন কয়েক ধরেই জলপাইগুড়ির রাজবাড়ি দিঘিতে জমায়েত হচ্ছিলেন ওই ‘যোগ্যেরা’। সোমবার সকাল থেকে কেউ মোবাইলের পর্দায় কেউ বা কাউকে ফোন করে খোঁজ রাখছিলেন এসএসসি-র ২০১৬ সালের নিয়োগ প্যানেল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কী নির্দেশ দেয়। এ দিন বিকেলে যখন সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ আসে, তখন চাকরিহারা এক ‘যোগ্য’ শিক্ষক বাকিদের সামনে বসিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের প্রকৃত লড়াই আজ থেকেই শুরু হল। এত দিন আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় ছিলাম। সেখানে স্থগিতাদেশ পেলাম না। এ বার আইনি লড়াই এক মাত্র পথ।”
আগামী সোমবার ফের সুপ্রিম কোর্টে এসএসসি মামলার শুনানি রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। সেই শুনানিতে ‘যোগ্যদের’ তরফে আইনজীবী থাকবেন বলে এ দিন স্থির হয়েছে। এক শিক্ষকের কথায়, “আমাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক হয়েছে। তার পরে দিল্লিতে পৌঁছেছেন সকলে। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী শুনানিতে আইনজীবীরা থাকবেন।”
চাকরিহারা ‘যোগ্যদের’ দাবি, ফের তাঁদের সাধারণ ভাবে পরীক্ষায় বসতে হলে, আন্দোলনের পথে যাবেন। বিজ্ঞানের এক শিক্ষকের কথায়, “আমি প্রাথমিকের চাকরি ছেড়ে এসএসসি দিয়েছিলাম। তাতেই সুযোগ পেয়েছি। আর পরীক্ষায় বসতে পারব না। কারণ, আর কিছুই না, তা হলে আমাদের প্রতি অবিচার হবে।” জলপাইগুড়িতে এখনও পর্যন্ত শ’পাঁচেক ‘যোগ্য’ চাকরিহারার খোঁজ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে শতাধিক শিক্ষক কোনও না কোনও চাকরি ছেড়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে অনেকেই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন বলে দাবি।
‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের সংগঠনের তরফেই শুরু করা হয়েছে মানসিক সহায়তা দেওয়া। সংগঠনের জলপাইগুড়ির কমিটির এক পদাধিকারী বলেন, “গত সপ্তাহের সোমবার বজ্রপাত হয়েছিল, আজ মহাবজ্রপাত হল। অনেকেই ভেঙে পড়েছেন। আমরা যত নম্বর পেয়েছি, সকলকে ফোন করে স্বাভাবিক থাকতে বলছি। আইনি পথে থাকলে আমাদের বঞ্চিত হতে হবে না বলে সকলকে জানাচ্ছি।”
‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়িয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন। যদিও ওই চাকরিহারাদের দাবি, তাঁরা নিজেরাই আইনজীবী নিয়োগ করে আলোচনা করছেন। এ দিন এক শিক্ষকের কথায়, “সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে আর কোনও রাজনৈতিক শিবিরে আমরা যেতে রাজি নই। নিজেরাই নিজেদের লড়াই লড়ব। আমরা যোগ্য। তাই আত্মবিশ্বাস আছে।”