ঐতিহ্য ফিরে পেল রাজরাজেশ্বরী

কমর্সূত্রে এবং হাওয়া বদল করতে এখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী থেকে শুরু করে বিধানচন্দ্র রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, ভিভি গিরি, পিসি সরকার (সিনিয়র), শরৎ বসু, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখেরা ওই হলের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

কার্শিয়াং শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:৫৭
Share:

রাজ রাজেশ্বরী মন্দিরের দুর্গাপুজো। —ফাইল ছবি

গত এক বছরে পাহাড়ে আন্দোলনের জেরে পুড়ে গিয়েছিল বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনের ৮৭ বছরের ঐতিহ্যবাহী রাজরাজেশ্বরী হল। প্রশাসন এবং কার্শিয়াং পুরসভার সহায়তায় এবার পুরোদমে দুর্গাপুজো হয়েছে ওই হলে। পুজোর পর থেকেই মানসিক জোর অনেকটাই ফিরে পেয়েছেন অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা।

Advertisement

প্রায় ১০১ বছর আগে কার্শিয়াংয়ে অনেক বাঙালির বসবাস ছিল। সেই সময় পাহাড়ে হাওয়া বদল করতে এসে হরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ‘বাঙালি অ্যাসোয়িয়েশন’ তৈরি করেন। উদ্দেশ ছিল, পাহাড়েও নানারকম সাংস্কৃতিক চর্চা বজায় রাখা। সারা বছর ধরে নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে কার্শিয়াংয়ের প্রাচীন ঐতিহ্যের একটি অন্যতম পরিচয় হয়ে উঠেছে অ্যাসোসিয়েশনের রাজরাজেশ্বরী হলটি।

কমর্সূত্রে এবং হাওয়া বদল করতে এখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, জওহরলাল নেহরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী থেকে শুরু করে বিধানচন্দ্র রায়, অনিল চট্টোপাধ্যায়, ভিভি গিরি, পিসি সরকার (সিনিয়র), শরৎ বসু, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখেরা ওই হলের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। পাহাড়ে আন্দোলনের সময় থেকেই খানিকটা সমস্যা হয়ে উঠেছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করায়। গত বছর পাহাড়ের আন্দোলনের সময় সমস্ত ঐতিহ্যবাহী ছবি-সহ প্রাচীন কিছু সামগ্রী আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। হলের কর্ণধার তথা অ্যাসোসিয়েশনের মূল কাণ্ডারি অলোকা দে পেশায় দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘তখন থেকেই হতাশার মধ্যে পড়ে যান সংগঠনের সদস্যেরা। তবে প্রশাসনের সহায়তায় যেভাবে হলটি আবার নতুন করে গড়া হল তাতে আমরা শক্তি সঞ্চয় করে পুজো করেছি এবার।’’

Advertisement

অলোকাদেবীর একান্ত চেষ্টায় নতুন করে পুজো শুরু করার উৎসাহ পায় হলের এই প্রজন্মের সদস্যেরাও। পুজোকে কেন্দ্র করেই আবার সেই আগের মতো সামাজিক মেলবন্ধনের মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল রাজরাজেশ্বরী। সকলেই অংশ নেন ছবি আঁকা, শঙ্খবাজানো, আরতির মতো অনুষ্ঠানে। তিনি জানান, রীতি মেনে ১ বৈশাখ, রবীন্দ্র জয়ন্তী, নজরুল জয়ন্তী এবং ১৫ অগস্ট উদ্‌যাপান করা হত। তার সঙ্গে বছরের চারটি দেব-দেবীর পুজোকে কেন্দ্র করে সেখানে নানারকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের টানেই কার্শিয়াংয়ের মানুষ এসে হাজির হতেন হলে। আগে নেপালি স্কুলের বাচ্চাদের দিয়ে বাল্মিকী প্রতিভা নাটকটিও মঞ্চস্থ করা হয়েছিল। তবে গত এক বছর কিছুই করা সম্ভব হয়নি।

কার্শিয়াংয়ের এসডিও দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সাংস্কৃতিক ঐক্য বজায় রাখতে পাহাড়ে এরকম সংগঠন আরও প্রয়োজন।’’ সংগঠনের কর্মসমিতির চন্দন কর্মকার চন্দন কর্মকার বলেন, ‘‘নতুন করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে।’’ একটি নতুন নাটক মঞ্চস্থ করা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement