Rabindranath Ghosh

Coochbehar municipal: চেয়ারম্যান রবি, সমর্থন নির্দলেরও

এ দিন চেয়ারম্যান হিসাবে রবীন্দ্রনাথের নাম ঘোষণা হতে প্রথম ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানান পার্থপ্রতিম।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২২ ০৮:৫৯
Share:

মদনমোহন মন্দিরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান হিসাবে বৃহস্পতিবার শপথ নিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। এক সময় তিনিই ছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের শেষ কথা। ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে দলের পরাজয়ের পরে জেলা সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এ বার বিধানসভায় হেরে দলে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েন তিনি। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়ে ফের গুরুত্ব বাড়ানো হল রবীন্দ্রনাথের। দিন কয়েক ধরে হাবেভাবে তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দিচ্ছিলেন। এ দিন চেয়ারম্যান হিসাবে রবীন্দ্রনাথের নাম ঘোষণা হতে প্রথম ফুল নিয়ে শুভেচ্ছা জানান পার্থপ্রতিম।

Advertisement

এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে হাজির হন কাউন্সিলরদের বড় অংশ। গাড়ির কনভয় নিয়ে বেরিয়ে হনুমান মন্দির, মদনমোহন মন্দির হয়ে পৌঁছন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে। সেখানে অপেক্ষা করছিলেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, আব্দুল জলিল আহমেদরা। একসঙ্গে হেঁটে পুরসভার হলঘরে পৌঁছন তাঁরা। বৃহস্পতিবার এমনই ছবি দেখা গেল কোচবিহারে। কেউ বললেন, “তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করল।” কেউ বললেন, “রবীন্দ্রনাথ চাপ নেননি, সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরকে বগলদাবা করে পুরসভায় পৌঁছেছেন।” তৃণমূলের দু’একজন নেতা চুপিসারে বলছিলেন, দু’জনের (রবীন্দ্রনাথ ও পার্থপ্রতিম) উপরেই চাপ ছিল। দলের নির্দেশ অমান্য করলে এ বার রক্ষে ছিল না।

বুধবারই মাথাভাঙা পুরসভায় দুই তৃণমূল কাউন্সিলর দলের নির্দেশের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। ২০ আসনের পুরসভায় তৃণমূল জিতেছে ১৫টি, ৩টি দখল করে নির্দল (বিক্ষুব্ধ তৃণমূল) ও দু’টিতে বাম প্রার্থী। তৃণমূলের জয়ী কাউন্সিলরদের মধ্যে প্রাক্তন চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু, দু’বারের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন আমিনা আহমেদ, তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক রয়েছেন। নির্দল হিসেবে জয়ী ভুষণ সিংহও প্রাক্তন চেয়ারম্যান। সব মিলিয়ে কিছুটা হলেও চাপ তৈরি হয়েছিল। পুরসভায় পৌঁছে পার্থপ্রতিম দলের কাউন্সিলরদের হাতে খাম তুলে দেন। শপথবাক্য শেষ হতে দরজা বন্ধ ঘরে ওই খাম খুলে চেয়ারম্যান হিসেবে রবীন্দ্রনাথ ও ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে আমিনা আহমেদের নাম ঘোষণা করেন এক তৃণমূল কাউন্সিলর। সমর্থন করেন আঠেরো জন কাউন্সিলর। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৩ জন নির্দল কাউন্সিলরও।

Advertisement

রবীন্দ্রনাথ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালনের চেষ্টা করব। উন্নয়ন ও পরিষেবা ঘরে-ঘরে পৌঁছে দেওয়াই লক্ষ্য।” পার্থপ্রতিম বলেন, “দলের তরফে সব সময়ই পাশে থাকব।” অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, আব্দুল জলিল আহমেদ, হিতেন বর্মণ প্রমুখ। দলের চারটি শাখা সংগঠনের জেলা নেতারাও ছিলেন। আব্দুল জলিল বলেন, “জেলা সংগঠনকে আরও মজবুত করাই লক্ষ্য। আমাদের মধ্যে বিরোধ নেই।” ভুষণ বলেন, “যোগ্যতম ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবাই পাশে থাকব।” আরেক নির্দল কাউন্সিলর উজ্জ্বল তর বলেন, “আমি তো তৃণমূলই। দলের হয়েই কাজ করেছি, এ বারও করব।” পার্থ অবশ্য বলেন, “নির্দলদের দলে নেওয়া হবে না। কারণ তাঁরা দলের নির্দেশ অমান্য করেছেন।”

তৃণমূলের কয়েকজন কর্মীর কথায়, জেলা রাজনীতিতে তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। রবীন্দ্রনাথ ও পার্থর মধ্যে দূরত্ব কমানো প্রয়োজন। দু’জনের কেউই দূরত্বের কথা মানতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement