নাম ঘোষণা হওয়ার পরে জনসংযোগে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেই মুখ করে কোচবিহার পুরসভা দখলের ছক কষেছে তৃণমূল। শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথকে তাঁর বাড়ির এলাকা ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এ বারই প্রথম পুর নির্বাচনে প্রার্থী হলেন রবীন্দ্রনাথ। এর আগে পাঁচবার বিধানসভা ভোটে লড়াই করেন তিনি। তার মধ্যে দু’বার জিতলেও তিনবার হেরে যান। এবারেও নাটাবাড়ি বিধানসভা থেকে হেরে যান রবীন্দ্রনাথ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এত দিন রবীন্দ্রনাথ তাঁর গ্রামের বাড়ি ডাউয়াগুড়ি এলাকার ভোটার ছিলেন। এবারই তিনি পুর এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম তোলেন। তার পর থেকেই তাঁকে দল প্রার্থী করবে কি না তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। শনিবার রবীন্দ্রনাথ বলেন, “দল আমাকে প্রার্থী করেছে। আমরা সবাই মিলে জয়ী হব। কোচবিহার শহরে আরও উন্নয়ন করাই আমাদের লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শহরে নানা উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে।”
রবীন্দ্রনাথ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিধানসভায় হেরে যাওয়ার পরে কেন পুরসভায় দল তাঁকে ভরসা করছে? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। দল মনে করছে, বিধানসভায় যে সমীকরণে ভোট হয়েছে, পুরসভায় তা হওয়ার সুযোগ নেই। এ ছাড়া বিধায়ক ও মন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর বিধানসভা এলাকা তো বটেই, শহরেরও নানা উন্নয়নমূলক কাজের শরিক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের নাটাবাড়ি এলাকাতে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেহ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর নাটাবাড়ি বিধানসভার মধ্যে রাস্তাঘাট থেকে সেতু’র অনেকটাই উন্নয়ন হয়েছে। শহররে মানুষ রবীন্দ্রনাথের ওই কাজকে ভালো চোখেই দেখছেন বলে মনে করছে দল। ওই উন্নয়নমূলক কাজের খতিয়ান তুলে ধরেই প্রচারও করবে তৃণমূল। এবারে কোচবিহার পুরসভা দখল নিয়ে শাসক দলের চিন্তা রয়েছে। লোকসভার পরে এবারের বিধানসভা দুই ভোটের নিরিখেই কোচবিহার পুরসভায় এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতা ধরে রাখার পরেও কোচবিহার পুরসভা এলাকায় যথেষ্ট শক্তিশালী বিজেপি। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে একজন হেভিওয়েট প্রার্থী দাঁড় করিয়ে বাজিমাৎ করতে চাইছে শাসক দল।
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “শাসক দল যাকেই মুখ করে লড়াই করুক না কেন, এবারে কোনও লাভ হবে না। কারণ পুরসভার মানুষ তৃণমূলের কাজে বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। তাই সমস্ত ওয়ার্ডেই বিজেপি প্রার্থীরা জয়ী হবে।”