এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ফেসবুক লাইভ রবীন্দ্রনাথ ঘোষের।
খবর নিয়মিতই পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু তাঁর নিজের মুখ থেকেই এ বার শোনা গেল, ভাল রয়েছেন। দ্রুত ময়দানে নামবেন। তাতে স্বস্তির শ্বাস নিয়েছেন কোচবিহারের অনেক তৃণমূল কর্মী।
১৫ নভেম্বর গভীর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। কোচবিহারের প্রাথমিক পর্যায়ের চিকিৎসার পরে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই তাঁকে এয়ার-অ্যাম্বুল্যান্সে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে এসএসকেএমে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তাঁর অ্যাঞ্জিয়োপ্লাস্টি হয়েছে। তার পরে কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা নাগাদ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ফেসবুক লাইভ করেন তিনি। প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে তিনি লাইভে ছিলেন। সেই সঙ্গেই তাঁর বার্তা, যত দিন বেঁচে থাকবেন, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর হাত শক্ত করতেই কাজ করে যাবেন। তিনি বারে বারেই মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি যে দ্রুত ময়দানে নামবেন সে বার্তাও দিয়েছেন।
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। তার পরেই রবীন্দ্রনাথকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয় বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে। পার্থপ্রতিম রায়কে করা হয় কার্যকরী সভাপতি। জেলা রাজনীতিতে ওই দু’জনের অনুগামীদের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের অনুগামীদের দ্বন্দ্ব দীর্ঘ সময়ের। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিজেপির দাপট। জেলায় রাজ্যের শাসক দলের সংগঠনও অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফেসবুক লাইভে বারে বারে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন রবিবাবু। এনআরসি নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ের ডাক দেন। তিনি দাবি করেন, এনআরসি নিয়ে অসমে লক্ষ লক্ষ মানুষকে সমস্যার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর আবেদন ছিল, যারা অভিমান বা রাগ করে নানা কারণে দূরে চলে গিয়েছেন তাঁরা যেন ফের তৃণমূলে শামিল হন।
ফেসবুক লাইভে তাঁকে তাঁর অনুগামীরা ‘টাইগার’ বলে আখ্যা দেন। তবে সে সব খুব সন্তর্পণে পাশ কাটিয়ে গিয়েছেন। লাইভে তিনি বলেন, “আমি কোনও টাইগার নই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক জন সৈনিক। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার থেকে বিধানসভার ৯টি আসন তাঁর হাতে তুলে দেওয়া আমাদের লক্ষ্য।” তিনি আরও জানান, ৯টি বিধানসভা আসনে জয় আনতে গেলে ঐক্যবদ্ধ্য হয়ে লড়াই করতে হবে। তাঁর একার পক্ষে সম্ভব হবে না।
বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, “রবীন্দ্রনাথবাবুর সুস্থতা কামনা করি। কিন্তু বিধানসভা আসন জয় নিয়ে তিনি যা ভাবছেন, তা আর হওয়ার নয়। তাই এ সব না ভেবে সুস্থ জীবনযাপন করুন, এটাই চাইব।”