প্রতীকী ছবি।
সোমবার রাতের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার তড়িঘড়ি ৬৯ জনের লালারসের রিপোর্ট চলে এল জটেশ্বর কোয়রান্টিন সেন্টারে। সব রিপোর্টই নেগেটিভ বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ফলে এ দিন ওই ৬৯ জনের সকলকেই হোম কোয়রান্টিনে পাঠাল প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর।
নানা অব্যবস্থা-সহ করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট দেরিতে আসার অভিযোগ তুলে সোমবার রাতে ফালাকাটার জটেশ্বরের এই কোয়রান্টিন সেন্টারে তুমুল বিক্ষোভ দেখান সেখানকার আবাসিকরা। বিডিও সুপ্রতীক মজুমদার ও পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা ছুটে গেলে তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। বিডিও এ দিন জানান, ৬৯ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাঁদের এ দিনই হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে।
তবে কোয়রান্টিন সেন্টার নিয়ে দুশ্চিন্তা অবশ্য তাতেও কাটছে না আলিপুরদুয়ারে। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকদের কোথায় রাখা হবে, মূলত সেটাই এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের কাছে। সূত্রের খবর, স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধা এড়াতে ওই শ্রমিকদের নিজেদের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোয়রান্টিন সেন্টার তৈরি করে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু সূত্রের খবর, অর্ধেকের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতে এখনও পর্যন্ত জায়গা না মেলায় সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ বিশ বাঁও জলে। তবে এখনও এটা নিয়ে আশা ছাড়ছেন না প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, লকডাউনের সময় জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখতে প্রায় চল্লিশটি কোয়রান্টিন সেন্টার খোলা হয়। যেখানে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু এখনও বহু মানুষের জেলায় ফেরা কার্যত সময়ের অপেক্ষা বলে প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের ধারণা। ফলে মাত্র চল্লিশটি কোয়রান্টিন সেন্টারে তাঁদের সবাইকে রাখা যে সম্ভব নয়, সে ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অবস্থায় জেলার বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে কোয়রান্টিন সেন্টার খোলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একাধিক জায়গা থেকে বাধা আসতে শুরু করে। এই অবস্থায় প্রশাসনের কর্তারা প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি করে কোয়রান্টিন সেন্টার খোলার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক হয়, পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের গ্রাম পঞ্চায়েতে ওই কোয়রান্টিনগুলোতে থাকবেন। পঞ্চায়েতের প্রধানদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও করেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কিন্তু সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত জেলার অর্ধেকের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতেই কোয়রান্টিন সেন্টারের জন্য জায়গা ঠিক হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কোনও কোনও এলাকায় দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে একটি সেন্টার খোলার চেষ্টা চলছে বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, “ভিন্ রাজ্য থেকে জেলায় ফেরা শ্রমিকদের রাখার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।”