বসন্তে: লাগল যে দোল। আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে
গাদা ফুল, কমলালেবুর খোসা, ভুট্টার গুঁড়ো, কাঁচা হলুদ, অপরাজিতা, পালং আর বিটের নির্যাস। সুগন্ধি হিসাবে জুঁই ফুল আর লেবুর তেল। এমন সব জিনিস দিয়েই তৈরি ভেষজ আবিরের চাহিদা তুঙ্গে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। দিন কয়েক থেকে ভেষজ আবিরে বাজার ছেয়েছে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। রাসায়নিক মেশানো কম দামের আবির যে বাজারে একেবারেই নেই, তা নয়। কিন্তু তা বাজারে কাটছে না। কিন্তু, ভেষজ আবির কি সত্যিই ভেষজ? নাকি ভেষজের নামে বিক্রি হচ্ছে রাসায়নিক মেশানো আবিরই, উঠেছে প্রশ্ন। বন দফতরের উদ্যোগে যে ভেষজ আবির তৈরি শুরু হয়েছিল, তা পরিমাণে এতটাই কম যে কোচবিহার-আলিপুরদুয়ারের মতো জেলায় পৌঁছয় না।
সোমবার কোচবিহারের ভবানীগঞ্জ বাজারে দেখা গেল, আবিরে বিক্রি হচ্ছে দেদার। শিশুদের নিয়ে বাজারে হাজির তপন দাস নামে এক বাসিন্দা। ভেষজ আবিরের খোঁজ করছিলেন। একটু বেশি দামের অবিরই কিনলেন। বললেন, ‘‘আমাদের তো বোঝার উপায় নেই। ব্যবসায়ীদের কথাতেই ভরসা করতে হয়।’’ ব্যবসায়ীরা জানালেন, তাঁরা ওই আবির আনেন কলকাতা থেকে। কোচবিহার জেলা আতসবাজি ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি সুকুমার দে বলেন, ‘‘ভাল সংস্থার কাছ থেকেই আবির আনি। নকল হওয়ার কথা নয়। কারণ, গ্রাহকেরা এখন ভেষজ আবির বেশি নেন।’’ মহকুমাশাসক (কোচবিহার সদর) রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘নজর রাখা হচ্ছে। কোথাও অভিযোগ পেলে, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আলিপুরদুয়ার জেলাতেও সরকারি ভাবে ভেষজ আবির তৈরির কাজ শুরু হয়নি বলে অভিযোগ। যার জেরে ব্যবসায়ীদের বাইরে থেকেই নিয়ে আসতে হচ্ছে তা। আলিপুরদুয়ার শহরের বড়বাজার সংলগ্ন বাটা মোড়ের ব্যবসায়ী সঞ্জীব দাস বলেন, “জেলায় ভেষজ আবিরের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু এখানে সে আবির তৈরি না হওয়ায় আনতে হচ্ছে কলকাতা থেকে।’’ জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এই জেলায় ভেষজ আবিরর তৈরি হয় বলে তথ্য তাঁদেরও জানা নেই। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের এক শীর্ষ বনকর্তা বলেন, “দক্ষিণবঙ্গে এমন আবিরের চাহিদা প্রচুর। সেখানে এই আবির বেশি তৈরি হয় বলে শুনেছি।”