অনন্ত মহারাজ। —ফাইল চিত্র।
কিছু দিন আগেই ‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের’ প্রধান নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছে বিজেপি। এর মধ্যেই রাজবংশী অধ্যুষিত ধূপগুড়িতে বিধানসভা উপনির্বাচন। যে প্রচারের শেষবেলায় নগেন্দ্রকে ময়দানে নামিয়েছে বিজেপি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়িতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। প্রশ্ন উঠছে, নগেন্দ্র-ম্যাজিক কাজে লাগিয়ে এ বারও কি ওই আসনে জয় পাবে বিজেপি? দলের একটি অংশ বলছেন, ‘‘রাজবংশীদের মধ্যে অনন্ত মহারাজের কী প্রভাব রয়েছে, সেটাও এ বার প্রমাণ হয়ে যাবে।’’ আবার অন্য এক দল বলছে, ‘‘নিজের দলের সদস্যদের উপরে ভরসা না রেখে ভাড়াটেদের ভরসায় কতটা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব তা এ বারেই প্রমাণিত হয়ে যাবে।’’
বিজেপির নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত সরাসরি বলেন, ‘‘বেশির ভাগ সময়ই লক্ষ্য করা যাচ্ছে নিজের দলের কর্মীদের উপরে ভরসা কম করা হচ্ছে। ভাড়াটেদের উপরে ভরসা বেশি রাখা হচ্ছে। এ বার তো রাজ্যসভার সাংসদও দলের থেকে করা হয়নি। গ্রেটার নেতাকে সাংসদ করা হয়েছে। তা থেকে কতটা ফল পাওয়া যাবে তা প্রমাণিত হবে।’’ অনন্ত মহারাজ অবশ্য এই কথায় কোনও গুরুত্ব দিতে চান না। তিনি বলেন, ‘‘আমি তো কাউকে জয়ী করার দায়িত্ব নিইনি। তাই এমন কথা অবান্তর। এটুকু বলতে পারি, বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়েছি। চোখ বন্ধ করে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হবেন।’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপিতে দলের দুটি গোষ্ঠী এখন কাজ করছে। এক পক্ষ সরাসরি, অনন্ত মহারাজের মতো নেতার পক্ষে রয়েছে। তাঁদের অনেকে রাজ্যভাগের দাবিকে সমর্থন করেন। আর এক পক্ষ, রাজ্যভাগের যে কোনও দাবির যেমন বিরোধী, আবার দলের বাইরে কাউকে অধিক গুরুত্ব দেওয়ার বিরোধী। দ্বিতীয় পক্ষ মনে করছে, যদি ধূপগুড়িতে বিজেপির পরাজয় হয় বা ভোট কমে যায় তা হলে বুঝতে হবে দলের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। দলের বাইরের কাউকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই ফল খারাপ হয়েছে বলে দাবি করে দলে প্রশ্ন তুলতেও প্রস্তুত হয়েছে তাঁরা। আর যদি ফল ভাল হয় তা হলে প্রথম পক্ষের অবস্থান আরও শক্তিশালী হবে। ধূপগুড়ি বিজেপির দখলেই ছিল। বিধায়কের মৃত্যুর জন্য ওই আসনে উপনির্বাচন হচ্ছে। দলের বড় অংশ অবশ্য অনন্ত মহারাজের প্রচারসভায় ভিড় দেখে খুশি হয়েছেন। শনিবার ধূপগুড়িতে সভা করেছিলেন অনন্ত। মূলত গ্রেটার কর্মীরাই সভার মাঠ ভরিয়েছিলেন। ওই সভায় ছিলেন বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিরঞ্জন দে। তিনি বলেন, ‘‘ধূপগুড়িতে আমরা জয়ী হব তা নিয়ে প্রশ্ন নেই। অনন্ত মহারাজের সভাতেও ভিড় উপচে পড়েছিল।’’