রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপাল নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপককুমার রায় টানা ছুটিতে। সোমবার থেকে দু’দিনের ছুটিতে গেলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকারও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী তপন নাগের উপর থেকে সাসপেনশন তোলার দাবিতে এ দিনও দিনভর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের অবস্থান বিক্ষোভ চলে। এ দিন আধিকারিকদের নজরদারির অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন ও প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হয় বলে অভিযোগ।
তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা সুবীর চক্রবর্তী বলেন, “আগে থেকেই উপাচার্য আমাদের আন্দোলনের ভয়ে টানা ছুটিতে গিয়েছেন। রেজিস্ট্রারও দু’দিনের ছুটিতে গেলেন। ফলে, এ দিন অভিভাবকহীন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় চলেছে। ফলে, পঠনপাঠন ও প্রশাসনিক কাজকর্ম তো ব্যাহত হবেই। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দায়ী।“ তাঁর দাবি, উপাচার্য ছুটিতে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসির (ইন্টারনাল কোয়ালিটি অ্যাসিয়োরেন্স সেল) ডিরেক্টরের পদ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুব্রত সাহাকে সরাতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবের দাবিতে এ দিন তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের রেজিস্ট্রারের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসার কথা ছিল। কিন্তু, রেজিস্ট্রার ছুটিতে চলে যাওয়ায় সেই কর্মসূচি বাতিল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিমেস্টারের পড়ুয়াদের অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ না আসায় এ দিন বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাস হয়নি। পড়ুয়াদের একাংশ কার্যালয়ে ফি জমা দেওয়া-সহ বিভিন্ন আবেদন জানাতে গিয়েও ফিরে আসেন। হেমতাবাদের সোনাবাড়ির বাসিন্দা প্রথম সিমেস্টারের এক ছাত্রী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওয়টস্যাপ’ গ্রুপে এ দিন ক্লাস না হওয়ার কথা জানানো হয়নি। ফলে, এ দিন রায়গঞ্জের বাইরের অনেক পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস করতে গিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজও হয়নি।“ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, এ দিন সুব্রত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-ইন-চার্জ প্রশান্ত মহালাকে আইকিউএসি’র ডিরেক্টরের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যনির্বাহী সমিতির বৈঠক ছাড়া ওই পদে রদবদল করা যায় কিনা, সে প্রশ্নও তুলেছেন তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা। সহকারী রেজিস্ট্রার বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, “আধিকারিকেরা ছুটিতে। আমার আর কী বলার আছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেমন চলার চলছে।“
বিনাশর্তে তপনের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহারের দাবিতে ৩ ডিসেম্বর তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতি ও টিএমসিপির সদস্যেরা উপাচার্যের ঘরের সামনে সারারাত অবস্থান বিক্ষোভ করেন। রাতভর উপাচার্য নিজের ঘরে ছিলেন। পরদিন সকালে নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি হন। ৫ ডিসেম্বর থেকে তিনি দু’দফায় ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি বাড়িয়েছেন।