রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ। —ফাইল চিত্র।
রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে জুনিয়র চিকিৎসক, হাউসস্টাফ ও নার্সদের মারধরে জড়িত থাকার অভিযোগে হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক দুই কর্মীকে ছাঁটাই করেন কর্তৃপক্ষ। নিরাপত্তা বাড়াতে একাধিক সিদ্ধান্তও হয়েছে। শনিবার রাজ্যের দুই শিক্ষা অধিকর্তার উপস্থিতিতে এক বৈঠকে বহির্বিভাগের পরিষেবা স্বাভাবিকের সিদ্ধান্ত হয়।
মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের পর রবিবার মেডিক্যালের বহির্বিভাগ বন্ধ করে অবস্থান বিক্ষোভ স্থগিত ঘোষণা করেছেন আন্দোলনকারীরা। সুপার প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, ‘‘পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে ও মেডিক্যালের চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, হাউস স্টাফ, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তায় নানা সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, এক শিশুর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার রাতে মেডিক্যালের মহিলা সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে শিশুর পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে জুনিয়র চিকিৎসক, হাউসস্টাফ ও নার্সদের মারপিট বেধে যায়। শিশুটির পরিবার হাউসস্টাফ সামিরুল হক-সহ এক দল জুনিয়র চিকিৎসদের বিরুদ্ধে পুলিশে মারধর ও মহিলাদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ করেন। একই সময়ে, বিজয় ভট্টাচার্য-সহ জুনিয়র চিকিৎসক ও হাউসস্টাফ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলর উত্তর দিনাজপুর জেলা মহিলা তৃণমূল সভাপতি চৈতালি ঘোষ সাহা, চৈতালির ঘনিষ্ঠ চুক্তিভিত্তিক কর্মী রাখি মণ্ডল-সহ শিশুর পরিবারের লোকেদের বিরুদ্ধে তাঁদের ও নার্সদের মারধরের অভিযোগ করেন। রাতেই পুলিশ বন্দরের বাসিন্দা শিশুটির আত্মীয় ছোটন মণ্ডল ও তাঁর বন্ধু জয়দেব বিশ্বাসকে গ্রেফতার করে। এ দিকে, অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে শুক্র ও শনিবার মেডিক্যালের বহির্বিভাগে অবস্থান বিক্ষোভ করেন জুনিয়র চিকিৎসক ও হাউসস্টাফেরা। মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানান, পুলিশ ও প্রশাসনের সহমতে বৈঠকে জুনিয়র চিকিৎসক, হাউসস্টাফ ও নার্সদের মারধরে অভিযুক্ত চুক্তিভিত্তিক কর্মী রাখি ও খোকন মণ্ডলকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত হয়। সব ওয়ার্ডে চিকিৎসক, জুনিয়র চিকিৎসক, হাউসস্টাফ, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তার স্বার্থে দু’জন পুলিশ কর্মী ও এক জন করে সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন রাখা, আব্দুলঘাটায় শিক্ষাভবনে এক জন করে পুলিশ কর্মী ও তিন জন সিভিক ভলান্টিয়ারের নজরদারি, মেডিক্যালের পুরনো ও নতুন ভবনে নিয়মিত পুলিশ ভ্যানের টহলদারি-সহ নানা সিদ্ধান্ত হয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসক অগ্নিপ্রভ গুপ্ত বলেন, ‘‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অভিযুক্তদের শাস্তির ব্যবস্থা না হলে ও আমাদের নিরাপত্তার দাবি পূরণ না হলে ফের আমরা আন্দোলনে নামব।" রাখির দাবি, তাঁকে ও খোকনকে মিথ্যা অভিযোগে ছাঁটাই করা হয়েছে। তাঁরা প্রয়োজনে আইনের পথে যাবেন।