গৌড়-আদিনা

সরঞ্জাম পড়ে, আলো-ধ্বনি শিকেয়

উদ্বোধনের পর কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর। তারপরেও মালদহের গৌড় এবং আদিনার ঐতিহাসিক স্থানে চালু হল না আলো ও ধ্বনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১২
Share:

উদ্বোধনের পর কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছর। তারপরেও মালদহের গৌড় এবং আদিনার ঐতিহাসিক স্থানে চালু হল না আলো ও ধ্বনি। চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে কোটি কোটি টাকা খরচ করে আনা সরঞ্জাম। এমনকী, আলো ও ধ্বনির সরঞ্জামগুলি চুরি হয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ। আর এর জন্য প্রশাসনের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন পর্যটকরা।

Advertisement

যদিও প্রশাসনের কর্তাদের দাবি পুরাতত্ত্ব বিভাগের ছাড়পত্র মিললেই গৌড় এবং আদিনায় চালু হয়ে যাবে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড। মালদহের জেলা শাসক শরদ কুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘দ্রুত গৌড় এবং আদিনায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড চালু করার চেষ্টা চলছে। পুরাতত্ত্ব বিভাগ ও পর্যটন দফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া গৌড় এবং আদিনায় আমরা সার্কিট হাউস গড়ে তোলারও প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছি।’’

ইংরেজবাজারের মহদিপুরে গৌড় এবং গাজলের পান্ডুয়ার আদিনায় রয়েছে জামে মসজিদ। জেলার এই দুই ঐতিহাসিক স্থানে সারা বছরই ভিড় জমান পর্যটকরা। জেলার বাইরে থেকেও বহু মানুষ ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলি দেখার জন্য ভিড় জমান। গৌড় এবং আদিনাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর গৌড়ের বারদুয়ারিতে পরীক্ষামূলক ভাবে চালু করা হয় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন। গৌড়ের মতো আদিনাতেও লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম চালু করা হয়। কলকাতার এক বেসরকারি সংস্থা কাজটি করছিল। গৌড়ে ১৩ মিনিট এবং আদিনায় সাড়ে চার মিনিটের একটি শো করা হয়েছিল। সেখানে কন্ঠ দিয়েছিলেন কবীর সুমন। কবীর সুমনের কন্ঠে উচ্চারিত হচ্ছিল নবাবি আমলের শাসন ব্যবস্থা, মহাপ্রভু চৈতন্য দেবের আগমনের ইতিহাস সহ পাল ও সেন যুগের নানান ইতিহাস এবং আদিনার জামে মসজিদের ইতিহাস সহ সাঁওতাল বিদ্রোহ, সুলতানি শাসন ব্যবস্থা তুলে ধরা হয়েছিল। ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলিকে প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য রঙিন আলো ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষা মূলক ভাবে একদিন করে দুই এলাকাতেই চালু হয় আলো এবং ধ্বনি। দুটি প্রকল্পের জন্য খরচ করা হয়েছে প্রায় চার কোটি টাকা। কোটি কোটির টাকার লাইট এবং সাউন্ড বক্স গুলি এখন চরম অবহেলায় পড়ে রয়েছে। এমনকী, আদিনার একটি সাউন্ড বক্স চুরিও হয়ে গিয়েছে। দিনের পর দিন পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম গুলি।

Advertisement

কেন এখনও চালু হচ্ছে না গৌড় ও আদিনায় বহু প্রতিক্ষিত আলো ও ধ্বনির ব্যবহার?

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের জন্য জেনারেটরের প্রয়োজন। একবারের শো এর জন্য জেনারেটরের জ্বালানি বাবদ খরচ হবে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। খরচের ঘাটতি মেটাতে টিকিট বিক্রির উদ্যোগও নেওয়া হয়েছিল। সেই টিকিট বিক্রির দায়িত্ব দেওয়া হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতিকে। মালদহ জেলা পরিষদের অতিরিক্ত কার্যনির্বাহী আধিকারিক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরাতত্ত্ব বিভাগ আমাদের টিকিট বিক্রির অনুমতি দেয়নি। ফলে এখনও তা চালু করা যায়নি। আমরা দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে গৌড় এবং আদিনায় লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম দ্রুত চালু করার চেষ্টা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement