উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।
জিজ্ঞাসাবাদের পরে সিবিআইয়ের ডাক পেয়ে গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় গিয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে দাবি, তার পরে, এই ক’দিনে প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারও সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করেননি। এমনকি, জরুরি নানা প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কেউ উপাচার্যের সঙ্গেও আগ বাড়িয়ে যোগাযোগ করেননি। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম নিয়ে সঙ্কটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই ‘প্রো-ভিসি’ পদ। ফলে, কার্যত ‘অভিভাবকহীন’ অবস্থা চলছে। তবে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ কিছু বলতে চাননি।
সমস্যা নিয়েও এখনই কেউ কিছু প্রকাশ্যে বলতে চাননি। উপাচার্য ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি। রেজিস্ট্রারের দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্য নিজে যোগাযোগ না-করায়, আগ বাড়িয়ে কেউ যোগাযোগ করতে যাননি। কেন না, উপাচার্যের ফোন তাঁর নিজের কাছে রয়েছে কি না তা নিয়েও অনেকে ধন্দে। সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় ফোন তাদের কাছে থাকার সম্ভাবনা বেশি বলেও অনেকে মনে করছেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধান অনুসারে, ‘প্রো-ভিসি’ রাখার ব্যাপার নেই। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই পদ থাকায় উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কাজ সামলে দেওয়া যায়। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সে সুযোগ না থাকায় বিভিন্ন কাজকর্মে বিপত্তির আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তিন দিনে খুব বেশি না হলেও সময় যত গড়াবে, একে-একে বিভিন্ন সমস্যা আসতে শুরু করবে বলে কর্তৃপক্ষের একাংশ মনে করছেন।
‘নিয়োগ-দুর্নীতিতে’ এসএসসির মামলার তদন্তে গত বুধবার সকালে সিবিআই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢোকে। উপাচার্যকে দফতরে এবং কোয়ার্টারে দফায় দফায় প্রায় ১০ ঘণ্টা জেরা করে তারা। পরদিন সকালে উপাচার্যকে কলকাতায় যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে বুধবার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠকও বাতিল হয়। প্রতিদিন কিছু কাজকর্মের খরচ, শিক্ষকদের ছুটিছাটা, পরীক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষক-কর্মী-আধিকারিকদের বেতন, নিয়মিত বিভিন্ন কার্যক্রমের জন্য উপাচার্য বা দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের অনুমোদন দরকার হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি সম্প্রতি অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি আটকে থাকার বিষয়টি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে। তাদের দাবি, মাস দু’য়েকেরও বেশি আগে ‘ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল’ (ন্যাক)-এর পরিদর্শনের সময় থেকে আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, পরিদর্শন মিটে গেলে, গরমের ছুটির পরে বিষয়টি দেখা হবে।
শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডলের দাবি, এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা উদ্বিগ্ন।