Hot Temperature

তীব্র দহনে বাড়ছে বিদ্যুৎ চাহিদা, ‘সমস্যা’ জোগানে

এমন দহন পরিস্থিতি এত দীর্ঘ সময় ধরে উত্তরবঙ্গে স্থায়ী হয়েছে কি না তা নিয়েও তর্ক চলছে। বাড়ছে এসি কেনার ঝোঁক।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৩ ০৮:৩১
Share:

দগ্ধবালু: তাপপ্রবাহের জেরে শুকিয়ে গিয়েছে তিস্তা। নিজস্ব চিত্র।

তাপপ্রবাহের তীব্রতা যত বাড়ছে, বিদ্যুতের চাহিদাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্রমাগত। গরম থেকে রক্ষা পেতে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অফিসে ফ্যান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি), কুলারের বাড়তি চাহিদার জেরে চাপ বাড়ছে শহরের বৈদ্যুতিক লাইনেও। স্বাভাবিক ভাবেই এর জের গিয়ে পড়ছে এলাকার বিদ্যুৎ লাইনের ট্রান্সফর্মারেও। বাড়তি বিদ্যুৎ টানার জেরে, মাঝেমধ্যেই বসে যাচ্ছে ট্রান্সফর্মার। ‘ট্রিপ’ করে যাচ্ছে বিদ্যুতের লাইন। তীব্র দহনের মধ্যে এই সমস্যাও জ্বালাচ্ছে শহরবাসীকে।

Advertisement

তবে এই পরিস্থিতিতে রক্ষা করেছে শয়ে শয়ে বন্ধ চা কারখানা। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দাবি, এমন নজিরবিহীন গরমে অতিরিক্ত বিদ্যুতের চাহিদা সামলাতে গিয়ে কিছুটা হলেও ‘শাপে বর’ হয়ে দেখা দিয়েছে বন্ধ চা বাগানগুলি। আবহাওয়ার কারণে জেলার অধিকাংশ চা কারখানা বন্ধ। ফলে, প্রচুর বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত হচ্ছে। এই গরমে তা দিয়েই অতিরিক্ত চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে তাতেও সবটা কুলোচ্ছে না বলে সংস্থার বক্তব্য। গত রবিবার যেমন শহরের বিভিন্ন এলাকায় কুড়ি থেকে চল্লিশ মিনিট লোডশেডিং করতে বাধ্য হয়েছে পর্ষদ।

এখন চা বাগানের ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর মরসুম। ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর পাতার চাহিদা মেটাতে দিনের সঙ্গে সারা রাত কারখানায় কাজ চলে। যদিও এ বছর আবহাওয়ার খেয়ালিপনায় চা পাতা উৎপাদন একেবারে তলানিতে। সে কারণে জেলার বহু কারখানা বন্ধ। এই কারখানাগুলির সংগঠনের উত্তরবঙ্গের প্রধান সঞ্জয় ধানুটি বলেন, “জুন মাসে প্রায় ৭০ শতাংশ চা কারখানা বন্ধ। দুঃস্বপ্নেও আগে কল্পনা করা যেত না।”

Advertisement

এমন দহন পরিস্থিতি এত দীর্ঘ সময় ধরে উত্তরবঙ্গে স্থায়ী হয়েছে কি না তা নিয়েও তর্ক চলছে। বাড়ছে এসি কেনার ঝোঁক। জলপাইগুড়ি বেগুনটারির একটি শো-রুমের ম্যানেজার শুভঙ্কর দাস বলেন, “প্রতিদিন অন্তত ৫০টি করে এসি বিক্রি হচ্ছে।” কদমতলার একটি শো-রুমের কর্মীর কথায়, “মাঝ রাতের পরেও গ্রাহকদের চাহিদা মেনে ক্রেতাদের বাড়িতে যন্ত্র বসাতে হচ্ছে।” শহরের একটি শো-রুম থেকেই গড়ে ৫০টি এসি বিক্রি হলে সব মিলিয়ে প্রতিদিন শহরে অন্তত ২০০ এসি বিক্রি হচ্ছে। তবে অভিযোগ, অনেকেই বিদ্যুৎ পর্ষদকে এসি বসানোর তথ্য জানাচ্ছেন না। তার ফলে, কোথাও কত অতিরিক্ত বিদ্যুতের জোগানের প্রয়োজন সে তথ্যও জানতে পারছে না পর্ষদ।

শহরের একটি ফিডার লাইনে বছরের এই সময়ে ১২০ অ্যাম্পায়ার বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়। এ বার তা হচ্ছে ১৫১ অ্যাম্পায়ার। তার জেরেই ট্রান্সফর্মারগুলি চাপে পড়ে বিকল হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার জলপাইগুড়ির আঞ্চলিক ম্যানেজার সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “এখনও তেমন সমস্যা হয়নি। তবে কোথায় কোথায়, নতুন করে কতগুলি এসি বসছে তা না জানা থাকলে সমস্যা হতেই পারে। কারণ, ট্রান্সফর্মারে চাপ বাড়ছে। আমাদের আগে থেকে জানা থাকলে, ট্রান্সফর্মারগুলির ক্ষমতা বাড়াতে পারব।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement