প্রতীকী ছবি।
তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিলেন যুবক। কিছুক্ষণ বাদেই ফিরে এসে তিনি জানান, আপহরণকারীরা মদ খেতে একটি দোকানে ঢুকেছে, সেই সুযোগে পালিয়ে এসেছেন। এরপর বাড়ির লোকজনকে নিয়ে কিছুটা দূরে যান ওই যুবক। ঘটনাক্রমে সেখান দিয়ে ভাইকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক শিক্ষক। তাদের সামনে দেখে ওই যুবক জানান যে, এই দু’জনই তাঁকে অপহরণ করেছিলেন! সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় গণপ্রহার। মালদহের চাঁচলের সতী সদরপুর লাগোয়া মহানন্দপুর প্রাথমিক স্কুলের পাশে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সকালে ওই মারধরের ঘটনায় জড়িত ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপহরণের অভিযোগ তোলা ওই যুবক কী উদ্দেশ্যে এমন করেছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চাঁচলের আইসি সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘শিক্ষক ও তাঁর ভাইকে মারধরের ঘটনায় ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মিথ্যে অভিযোগে শিক্ষক ও তার ভাইকে মারধর করা হয়েছে। ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁর অভিযোগ মিথ্যে বলে নিশ্চিত হয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার কেন্দ্রে যে যুবক, তাঁর নাম তাপি ঘোষ। তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, তিনি গত রাতে নিজের মোবাইল থেকে বাড়িতে ফোন করে অপহরণের গল্প ফাঁদেন। খানিক বাদেই তিনি বাড়ি ফিরে আসে। অপহরণের বিষয়টি নিয়ে ততক্ষণে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই সময় সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন শুক্রবাড়ি এলাকার শিক্ষক আসামুদ্দিন আহমেদ ও তাঁর ভাই রফিকুল আলম। হঠাৎ করেই তাপি দাবি করেন, ওই দু’জন তাঁকে অপহরণ করছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তাপিকে জেরার সময় তাঁর কথায় অসঙ্গতি দেখা যায়। তিনি নিজের ফোন থেকে কী ভাবে ফোন করলেন, সেই প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু কাউকে অপহরণ করা হলে প্রথমেই তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার কথা। এই সূত্রে জেরা চলতে থাকলে ভেঙে পড়েন তাপি। এর পর তিনি অসংলগ্ন কথাবার্তা শুরু করে। তার পরে মারধরের অভিযোগে তাপি-সহ ন’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আসামুদ্দিন চাঁচলেরই একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। এক আত্মীয়ের অসুস্থতার কথা শুনে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘অপহরণকারী বলে সকলে মিলে আমাদের মারতে শুরু করে। কোনও কথায় কান দিচ্ছিল না।’’