স্থায়ী সমিতি গঠন হতেই মালদহ জেলা পরিষদে কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়ে গেল। আগামী ২০ তারিখ নয়টি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন রয়েছে। স্থায়ী সমিতিতে অন্তর্ভুক্তির পর কে কোন কর্মাধ্যক্ষ পদ পাচ্ছেন, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, কর্মাধ্যক্ষ পদ পেতে অনেক সদস্যই জেলা এমনকি রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রীতিমতো দরবার শুরু করে দিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার অবশ্য বলেন, “কর্মাধ্যক্ষদের নাম চূড়ান্ত করবেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।”
সোমবার মালদহ জেলা পরিষদের ৯টি স্থায়ী সমিতি গঠন হয়েছে সাধারণ সভার মাধ্যমে। দুটি স্থায়ী সমিতিতে বিজেপি প্যানেল জমা দেওয়ায় সে দু’টিতে ভোটাভুটি হয়েছে। কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় অনায়াসেই ওই দু’টি সমিতি সহ বাকি সাতটি সমিতিই গঠন করে তৃণমূল। এ বার পালা কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আগামী ২০ তারিখ জেলা পরিষদেই ৯টি স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারি নিয়ম রয়েছে, যে পাঁচ জন সদস্য যে যে স্থায়ী সমিতিতে রয়েছেন সেই সদস্যদের মধ্যে থেকেই কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হবেন। সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি পদাধিকার বলে সব স্থায়ী সমিতিরই সদস্য। তাই তাঁদের দু’জনকে বাদ দিতে তৃণমূলের বাকি ২৭ জন সদস্যই কোনও না কোন সমিতিতে রয়েছেন। ফলে তাঁরাই এখন কে কোন পদ দখল করতে পারবেন, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার স্থায়ী সমিতিতে নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই কর্মাধ্যক্ষ পদ পেতে বেশ কিছু সদস্য জেলা এমনকি রাজ্য নেতৃত্বের অনেকের সঙ্গেই যোগাযোগ শুরু করেছেন। জেলা পরিষদের একটি স্থায়ী সমিতির এক সদস্য বলেন, ‘‘শুধু স্থায়ী সমিতির সদস্য হয়ে মানুষের সে ভাবে কাজ করার সুযোগ কম। কর্মাধ্যক্ষ হলে সেই সুযোগ অনেকটাই রয়েছে। তাই যোগ্যতা থাকলেও চেষ্টা করছি কর্মাধ্যক্ষ পদ পেতে। তবে শেষপর্যন্ত দল যদি মনে করে দেবে তবে হবে না হলে শুধু সদস্য হয়েই থেকে যেতে হবে।’’ এ দিকে এবারে নির্বাচিত হয়েছেন এবং গত তৃণমূল বোর্ডে কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন, এমন অনেকেই রয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কি ফের ওই পদে বসবেন নাকি দল এবারে নতুনদের সুযোগ দেবে সেটাই দেখার।
তবে কানাঘুষো রয়েছে, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন পুরনো বোর্ডে এই পদে থাকা দুর্গেশ সরকার বা মত্স্য কর্মাধ্যক্ষ পদে থাকা সামসুল হক। এঁদের মধ্যে একজন আবার জনস্বাস্থ্য পদেও থাকতে পারেন। কেননা দুজনের নামই ওই দুই স্থায়ী সমিতিতেই রয়েছে। মত্স্য কর্মাধ্যক্ষ হতে পারেন বিদায়ী সভাধিপতি সরলা মুর্মু। এ দিকে শিশু ও নারী উন্নয়ন কর্মাধ্যক্ষ পদে বিগত বোর্ডে কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন মর্জিনা খাতুন। এ বারেও তিনি হতে পারেন। পাশাপাশি অর্চনা মণ্ডলের নামও শোনা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ পদে চম্পা মণ্ডলের নাম শোনা যাচ্ছে। গত বোর্ডে তাঁর স্বামী ওই কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। কৃষিতে সামিউল ইসলাম ও প্রতিভা সিংহ, শিক্ষায় স্বপন মিশ্র ও রফিকূল ইসলাম, বনভূমিতে পিঙ্কি সরকার মাহাতদের নাম শোনা যাচ্ছে।