অপেক্ষা: কোলের বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিষেধক নিতে শিলিগুড়ির চম্পাসারি আর্বান পাবলিক হেল্থ সেন্টার সেভেনে সকাল থেকে বসে আছেন এক মহিলা। নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় ঢেউ সামলাতে অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা দিতে উদ্যোগী দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলা দফতরের একটি সূত্রেই বলা হয়েছে, এই সপ্তাহ থেকেই অন্তঃসত্ত্বা মায়েদেরও টিকা দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সঙ্গে ১২ বছর পর্যন্ত যাঁদের ছেলেমেয়ে রয়েছে, সেই মায়েদেরও টিকা দিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা আক্রান্ত হবে আশঙ্কায় মায়েদের টিকা দেওয়ার বিষয়টিতে জোর দিতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, বাচ্চারা অসুস্থ হলে মায়েদের সঙ্গে থাকতে হবে। আবার মায়েরা অসুস্থ হলে বাচ্চারা সহজেই আক্রান্ত হতে পারে।
প্রতিষেধক কর্মসূচির দায়িত্বে থাকা তথা উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-৩ সংযুক্ত লিউ বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউ সামলাতে অন্তঃসত্ত্বাদের টিকা দেওয়া হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে এ সপ্তাহ থেকেই তা করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ১২ বছর পর্যন্ত সন্তান রয়েছে এমন মায়েদের দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
দফতর সূত্রেই দাবি, অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি যেখানেই তিনি চিকিৎসা করাচ্ছেন সেটা কোনও বাধা হবে না বলে জানানো হয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা ওই মায়েদের সবাইকে টিকাকরণ করানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও একটি জায়গা বেছে সেখানে ওই প্রসূতিদের টিকাকরণের কথা ভাবা হয়েছে। কারণ, এখন বিভিন্ন কেন্দ্রে যে ভাবে লাইন দিয়ে বাসিন্দাদের টিকা নিতে হচ্ছে তাতে সমস্যা রয়েছে। লাইনে অপেক্ষা করতে হলে দুর্ভোগ পোহাতে হবে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে কেন্দ্রীয় ভাবে প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে। তা ছাড়া, এক সপ্তাহ শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে, এক সপ্তাহ মাতৃসদন— এ ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওই কর্মসূচি চলবে। পাহাড়ে ব্লকে যে সমস্ত সেন্টারে প্রসূতিরা আসেন সেখানে তাদের টিকার ব্যবস্থা হবে। তা ছাড়া অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের তালিকাও রয়েছে দফতরের কাছে। আইসিডিএ কেন্দ্র রয়েছে। সেই সমস্ত কেন্দ্রে মায়েদের সচেতনও করার কথা ভাবা হয়েছে।
জেলা দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পাল্স পোলিও নেয় এক লক্ষ ১৫ হাজারের মতো শিশু। তারা পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশু। ১২ বছর পর্যন্ত বয়সী রয়েছে তিন লক্ষের মতো। তাদের মায়েরা রয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে তিন চার হাজারের মতো মায়েদের প্রতিদিন এখন টিকা দেওয়া শুরু হয়েছে। ১৮ বছরের বেশি বয়স্ক মেয়েদের তারা যদি জানায় যে বাচ্চা রয়েছে তা হলেই টিকা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাচ্চার কোনও প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে না। কারণ, বাচ্চা রয়েছে এমন মায়েদের সকলকেই টিকা দিতে হবে। বাচ্চার করোনা হলে তার সঙ্গে মাকেও থাকতে হবে। যে সব বাচ্চা অন্যের কাছে থাকে তাদেরও টিকা দেওয়া হচ্ছে। কারণ তারা আক্রান্ত হলে ওই ব্যক্তিকেও সঙ্গে থাকতে হবে।