বিশৃঙ্খলা: ‘হাতাহাতি’তে দুই দলের নেতা-কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় আবাস যোজনার তদন্ত করছিলেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। সে সময় হাতাহাতিতে জড়ানোর অভিযোগ উঠল তৃণমূল ও বিজেপির কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি মহকুমার ফাঁসিদেওয়ার ঘটনা। বিজেপির অভিযোগ, আবাসের ‘অনিয়ম’ নিয়ে কেন্দ্রীয় দলকে জানাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে বিজেপি কর্মীরা ছিলেন। তাঁদের মারধর করা হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, মিথ্যে অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় দলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছিল বিজেপি। বিজেপির লোকেরাই তৃণমূল কর্মীদের গায়ে হাত তুলেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিজেপির অভিযোগ, ফাঁসিদেওয়ার টামবাড়ি এলাকায় বিজেপির করার অপরাধে আবাসের প্রাথমিক তালিকা থেকে ‘যোগ্য’দের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষার সময় আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে থেকে তৃণমূল নেতারা চাপ দিয়ে এই নাম বাদ দিয়েছেন। অথচ, পাকা বাড়ি থাকলেও ঘরের তালিকায় নাম রয়েছে শাসক ঘনিষ্ঠদের। কেন্দ্রীয় দল এলাকায় গেলে তারা সেই অভিযোগ তাঁরা জানাচ্ছিল। ঘটনাস্থলে তৃণমূলের বর্তমান ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রতিবাদ জানান। কেন্দ্রীয় দল কিছুটা সরে যেতেই দু’পক্ষ প্রথমে বাদানুবাদ, পরে, হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। পুলিশ ঝামেলা মেটাতে দু’পক্ষকে সরিয়ে দেয়।
বিজেপির ফাঁসিদেওয়া মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ বাগচীকে লাথি, ঘুষি মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিশ্বজিতের অভিযোগ, সুদান বিশ্বাস, সুনীল বর, রামাপদ রায়, সুমন্ত বিশ্বাসদের কাঁচা বাড়ি থাকলেও, প্রাথমিক তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ, দালান বাড়ি থাকলেও তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ তনু বিশ্বাসের মতো অনেকের নাম কাটা যায়নি। বিশ্বজিতের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় দল এলাকায় গিয়ে সে সবই দেখছিল। সত্য উদঘাটনে তৃণমূল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’’
তনু বিশ্বাসের দাবি, তাঁর দাদা, দিদি, মৃত মা ও তাঁর নামও আবাসের প্রাথমিক তালিকায় ছিল। দাদা ও দিদি দুঃস্থ। মায়ের ঘরটিই তাঁকে যদি দেওয়া হয় তাতে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু আবাসের প্রাথমিক সমীক্ষার আগেই তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। সে ঘর কী করে তিনি পাবেন? তনুর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁকে সমর্থন করি। মায়ের নামে যদি ঘর দেওয়া হয় আমি তো না করতে পারি না।’’
গত শনিবার এবং রবিবার কেন্দ্র কোনও রিপোর্ট পাঠাচ্ছিল না বলে দাবি জাতীয় স্তরের পর্যবেক্ষক দলের। এ দিন রিপোর্ট পেয়েই কাকভোরে বেরিয়ে পড়েন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যেরা। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সমতলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দলকে প্রশাসন সাধ্যমতো সাহায্য করছে। অথচ,তাঁরা বিজেপি নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এলাকায় ঘোরায় মানুষ প্রতিবাদ জানিয়েছে।’’
জেলা বিজেপি নেতা অনিল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘‘যাতে কেন্দ্রীয় দলের কাছে কোনও অভিযোগ না যায়, তার হুঁশিয়ারি দিচ্ছে তৃণমূল।’’