কালীপুজোর রাতে আপাতত পুলিশের হাসি চওড়া হল জলপাইগুড়িতে। এ দিক-ও দিক দ্রুমদ্রাম শব্দ হল বটে, তবে গত বছরের তুলনায় তা নেহাতই পাতে দেওয়ার যোগ্য নয় বলে এখনও পর্যন্ত জানাচ্ছেন শহরের বাসিন্দারদেরই একাংশ। রায়কতপাড়া, সেনপাড়া সহ জলপাইগুড়ি শহরের বেশ কিছু এলাকায় শব্দবাজি ফেটেছে, তবে নাগাড়ে শব্দ শোনা যায়নি বলে পুলিশেরও দাবি।
পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘বাজির আওয়াজ তো প্রায় শোনাই যাচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত অনেকটাই বাজির আওয়াজ কমেছে। আমরা আরও চেষ্টা চালাচ্ছি।’’ তিনি আরও জানান, শহরের চারদিকে পুলিশ রয়েছে, শব্দবাজির উপরে নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মঙ্গলবার সন্ধে থেকেই মোটরবাইকে পুলিশের ন়জরদারি চলেছে, টহল দিয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশকর্মীরাও। তার জেরেই মঙ্গলবার রাতে শব্দদানব জব্দ হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। শহরের বাজির দোকানগুলোর সামনেও পুলিশের নজরদারি ছিল। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, কালীপুজোয় বড় বাজেটের মণ্ডপগুলোর সামনে বাহিনী মোতায়েন রাখতে হয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণেও বাড়তি বাহিনী দিতে হয়। শব্দবাজি রুখতে নজরদারি চালানোর মতো প্রয়োজনীয় বাহিনী নেই। যতটুকু সম্ভব বাজির বাজার, দোকানগুলোয় নজরদারি চালানো হয়েছে। তাতেই সাফল্য এসেছে বলে পুলিশের দাবি।
তবে যে সব এলাকায় বাজি পুড়েছে তা নিয়েও চিন্তায় পুলিশ কর্মীরা। কারণ কালীপুজোর পরে আজ বুধবার দেওয়ালি। এ দিনও শব্দবাজি পোড়ানোর চল রয়েছে। কাজেই পুলিশ কতটা সফল তা আজই বোঝা যাবে বলে মনে করছেন বাসিন্দাদের একাংশ। এই কথা মেনে নিচ্ছে জেলা পুলিশের কর্তারাও।
ইতিহাসবিদ উমেশ শর্মা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কেউ যদি বাজি পোড়ায় তাতে অসুবিধে নেই। তবে অনেক শব্দ বাজি থাকে যা খুবই আওয়াজ করে। সেগুলো রুখতে প্রশাসন পদক্ষেপ করুক। তবে মনে হচ্ছে এ বছর তুলনায় কিছুটা কমেছে শব্দবাজি পোড়ানো।’’
পরিবেশ প্রেমী বিশ্বজিৎ দত্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘মানুষ যতদিন না সচেতন হবে ততদিন শুধুমাত্র আইন ও পুলিশকে দিয়েও কোনও কাজ হবে না।’’ তাঁর মতে আতসবাজিও সব দিক মাথায় রেখে যতটা সম্ভব কম মাত্রায় পোড়়ানো উচিত। বাজির ধোঁয়ায় শহরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, শিশুদের সমস্যা হয়। শ্বাসকষ্টের সমস্যাও বাড়ে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পশুপাখিদের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।