তৃণমূল যুব নেতার বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোর। —প্রতীকী চিত্র।
তৃণমূলের যুব নেতার বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল কোচবিহারের কিশামত দশগ্রাম এলাকায়। তবে বিরোধী নয় দলেরই একাংশ এই বোমাবাজির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন দিনহাটার ২ নম্বর ব্লক যুব তৃণমূল সুকুমার বর্মণ। যা নিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তৃণমূল যুব নেতা সুকুমারের বাড়ির সামনে একটি বোমা পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দে চমকে ওঠেন স্থানীয়রা। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন তৃণমূল যুবনেতা। ঠিক তখনই আরও একটি বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ তাঁর। তিনি দুষ্কৃতীদের চিনতে না পারলেও এই বোমাবাজির ঘটনায় বিরোধীদেরও হাত নেই বলে দাবি করেছেন সুকুমার। তিনি বলেন, ‘‘দলেরই একাংশ আমায় সরিয়ে দেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন থেকে চক্রান্ত করছেন।’’
সুকুমারের অভিযোগ, দ্বিতীয় বার ব্লক যুব সভাপতি হওয়া ইস্তক দলের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমায় রাজনীতি থেকে বসিয়ে দেওয়ার জন্য এবং প্রাণনাশের জন্যই এই বোমাবাজি হয়েছে।’’ নেতার সংযোজন, ‘‘দিনহাটা বিধানসভায় যাঁরা দল চালাচ্ছেন তাঁরাই আমার বিরুদ্ধে এই চক্রান্ত করছেন। যারা পুরনো তৃণমূল কর্মী, দিনহাটা বিধানসভায় মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যাঁরা সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন, তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’
পঞ্চায়েত ভোট সন্ত্রাসমুক্ত করা এবং সংগঠনকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখন উত্তরবঙ্গ সফরে। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে মানুষের ঢল যেমন দেখা গিয়েছে, তেমনই প্রার্থী বাছাইয়ের নির্বাচন নিয়ে ঝামেলাও হচ্ছে। তার মধ্যে নিজের দলের একাংশের বিরুদ্ধে তৃণমূল যুব নেতার অভিযোগে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
কোচবিহারের যুব তৃণমূল জেলা সভাপতি কমলেশ অধিকারীর কথায়, ‘‘ব্লক সভাপতি কী অভিযোগ করেছেন, তা আমার জানা নেই। তবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দিনহাটার সাহেবগঞ্জ এবং গোসানিমারিতে জনসংযোগ যাত্রা করে যাওয়ার পর থেকেই বিজেপি বুঝে গিয়েছে ওদের পায়ের তলায় জমি নেই। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে যুব তৃণমূল তাদের সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তাই যুব তৃণমূলের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করার জন্য রাতের অন্ধকারে বিজেপি বোমাবাজি করছে।’’
আর এ নিয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘তৃণমূলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল নতুন কিছু নয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে আসার পরই আমরা দেখেছি, পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী কে হবেন তাই নিয়ে তৃণমূলের চরম কোন্দল। এখন নিজেদের সেই ঝামেলা চাপা দিতে গিয়ে বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে তৃণমূল।’’