আশাকর্মীদের কর্মবিরতি চলছে। ফলে, সরকারি নির্দেশে মৌপালী চক্রবর্তী নামে এক অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী শিশুদের পালস পোলিয়োর প্রতিষেধক খাওয়াচ্ছেন। রবিবার হেমতাবাদের বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভোগ্রাম এলাকায়। (আশাকর্মীদের কপির ছবি হতে পারে।
আশা কর্মীদের কর্মবিরতি চলছেই। ফলে, কোথাও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের, কোথাও স্বাস্থ্যকর্মী বা নার্সদের বাড়তি দায়িত্ব দিয়ে পালস পোলিয়ো কর্মসূচি পালন করল স্বাস্থ্য দফতর। রবিবার দুই দিনাজপুর ও মালদহে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছে। তবে, তিন জেলায় বেশ কিছু আশা কর্মী এ দিন পালস পোলিয়ো কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। বস্তুত, রাজ্য সরকারের নির্দেশে এ দিন তিন জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঁচ বছর বয়সি শিশুদের পোলিয়ো প্রতিষেধক খাওয়ানো হয়। সোমবার থেকে বুধবার তিন জেলায় প্রতিটি বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুদের ওই প্রতিষেধক খাওয়ানোর কথা।
উত্তর দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণকুমার শর্মা বলেন, “আশা কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে জেলায় পালস পোলিয়ো কর্মসূচি চালাতে সমস্যা হয়েছে ঠিকই। তবে, স্বাস্থ্য দফতর বিকল্প কর্মীদের দিয়ে ওই কর্মসূচি পরিচালনা করেছে।” তাঁর দাবি, এ দিন জেলায় লক্ষ্যমাত্রার মোট ৮০ শতাংশ শিশুকে পালস পোলিয়ো প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।
বেতন বৃদ্ধি, নিয়মিত ইন্টেন্সিভ ও স্বাস্থ্যকর্মীর মর্যাদা দেওয়া, বকেয়া ইন্টেন্সিভ মেটানো-সহ একাধিক দাবিতে শুক্রবার থেকে দুই দিনাজপুর ও মালদহে অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করে আন্দোলনে নেমেছেন আশা কর্মীরা। এ দিন দিনভর রায়গঞ্জ শহরের বকুলতলা এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ করেন তাঁরা। এ দিকে, আশা কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে আজ, সোমবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে পালস পোলিয়ো কর্মসূচি কারা পরিদর্শন করবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। দক্ষিণ দিনাজপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ দাসের বক্তব্য, “বিকল্প কর্মীর ব্যবস্থা হওয়ায় জেলায় সমস্যা হয়নি।’’ আশা কর্মীদের আন্দোলনের জেরে রবিবার মালদহের বেশ কয়েকটি ব্লকে ওই কর্মসূচিতে প্রভাব পড়ে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মালদহের ১৫টি ব্লকের মধ্যে বামনগোলা, রতুয়া ২ ও কালিয়াচক ৩ ব্লকে আশা কর্মীদের একাংশ কর্মসূচিতে যোগ দিলেও বাকি ব্লকগুলিতে তাঁরা যোগ না দেওয়ায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। জেলার প্রায় ১৩০০টি কেন্দ্রে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট (ফিমেল), কমিউনিটি হেলথ অফিসার ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের আসরে শিশুদের পোলিয়ো খাওয়ানো হয়। জেলায় এ দিন মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭০ শতাংশ শিশুকে ওই প্রতিষেধক খাওয়ানো হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, ‘‘আশা কর্মীদের বিক্ষোভে কিছু কেন্দ্রে এ দিন শিশুদের প্রতিষেধক খাওয়ানো বন্ধ রাখতে হয়েছিল।’’ আশা কর্মী ইউনিয়নের উত্তর দিনাজপুরের সম্পাদক মিনতি সরকারের দাবি, তাঁদের অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতির মাঝে পালস পোলিয়ো টিকাকরণ কর্মসূচি পড়েছে। দাবি পূরণের লিখিত সরকারি প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করে ওই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়া সম্ভব নয়।
তথ্য সহায়তা: গৌর আচার্য, নীহার বিশ্বাস ও জয়ন্ত সেন