ব্যাট চালিয়ে রানের পাহাড়ে দুই পুলিশ

শাসকের ভয়ে ছুঁতে পারেনি তাঁদের। নিরপেক্ষ ভাবে ভোট করানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দু’জনই। একজন শীতলখুচি থানার ওসি বিশ্বাশ্রয় সরকার। অপরজন, পুলিশের এএসআই পরেশ বর্মন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৬ ০১:১৪
Share:

নাটাবাড়ির চিলাখানায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা তৃণমূলের ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেয় বলে অভিযোগ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব।

শাসকের ভয়ে ছুঁতে পারেনি তাঁদের। নিরপেক্ষ ভাবে ভোট করানোর জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন দু’জনই। একজন শীতলখুচি থানার ওসি বিশ্বাশ্রয় সরকার। অপরজন, পুলিশের এএসআই পরেশ বর্মন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার ভোট শুরু হতেই কোচবিহার জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়তে থাকে। যেমন শীতলখুচির খরারদিঘিতে বুথের সামনে জড়ো হওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ওই এলাকায় ভোটারদের একাংশকে ভয় দেখানোরও অভিযোগ ওঠে। তাঁদের ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

শুনেই সেখানে বাহিনী নিয়ে ছুটে যান বিশ্বাশ্রয় সরকার। তখনও সেখানে তৃণমূল কর্মীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল বলে অভিযোগ। গাড়ি থেকেই নেমেই তাড়া করেন তাঁদের। বাহিনীর জওয়ানরা লাঠিচার্জ করেন। ২ জনকে আটকও করেন তাঁরা। জানা গিয়েছে বিশ্বাশ্রয়বাবু এর পরে গ্রামের ভিতরে ঢুকে ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যান। তাঁদের বলেন, “কে আপনাদের বাধা দিচ্ছেন নাম বলুন।” অনেকেই তৃণমূলের নাম বলেন। তাঁকে আশ্বাস দিতে শোনা যায়, “একদম ভয় পাবেন না। আমরা আছি। চলুন ভোট দিতে।” এর পরেই ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তা দেখে এলাকার অনেকেই সাহস পান।

Advertisement

গত বছরের মে মাসে বিশ্বাশ্রয়বাবুকে ওই থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্বাশ্রয়বাবু ওই থানায় যোগ দেওয়ার পর থেকেই এলাকায় সমাজবিরোধী কার্যকলাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনেন। শুধু তাই নয়, ওই সময় ওই এলাকা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার ছিল। যার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি নিজে অবশ্য ওই ঘটনা নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করেছেন ওই ওসি। এর বাইরেও প্রত্যেকেই ভাল ভাবে কাজ করেছেন। যার জন্যে প্রত্যেকেই ভাল ভাবে ভোট দিতে পেরেছেন।” অন্যদিকে, শিলিগুড়ি কমিশনারেটের পুলিশ অফিসার পরেশবাবু ভোটের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে শুরু করেন বলে জানা গিয়েছে। বুধবার রাতে দিনহাটা বিধানসভা এলাকায় খাওয়াদাওয়ার আসর বসানোর কথা শুনে বাহিনী নিয়ে অভিযান চালান। ভোটারদের কাউকে যাতে ভয় দেখাতে না পারেন সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন। এ দিন সকালে শুকারুরকুঠি প্রাথমিক স্কুলের সামনে ডিউটি পড়েছিল তাঁর। শাসক দল জমায়েত করার চেষ্টা করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেন। তাঁর বিরুদ্ধে অবশ্য তৃণমূল ভোটদানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন।

দিনহাটা কেন্দ্রের প্রার্থী উদয়ন গুহ সেখানে গেলে তাঁর সঙ্গেও বচসায় জড়িয়ে পড়েন। তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ জানালেও তিনি তাঁর দায়িত্বে স্থির থাকেন। বিরোধীদের অনেকেই বলেন, “ওই দুই অফিসার আজ বুঝিয়ে দিয়েছেন তাঁরা চেষ্টা করলে সব পারেন।” শাসকদল অবশ্য ওই ব্যাপারে কিছু বলতে চাননি। তাঁদের বক্তব্য, “এদিন তো রাজ্য পুলিশের ব্যাপার ছিল না। যা করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী করেছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement