(বাঁ দিকে) তাজিমুল ইসলাম। — নিজস্ব চিত্র।
চোপড়াকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত তাজিমুল ইসলাম ওরফে জেসিবিকে জেরা করে মিলল দু’টি আগ্নেয়াস্ত্রের সন্ধান। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে ওই আগ্নেয়াস্ত্রগুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তবে আরও অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে শনিবার আদালতে জানায় পুলিশ।
গত রবিবার দুপুরে চোপড়ার তৃণমূল নেতা তাজিমুলের একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োয় দেখা যায়, এক তরুণীকে রাস্তায় ফেলে একছড়া কঞ্চি দিয়ে বেধড়ক মারছেন জেসিবি। মার খেতে খেতে গুটিয়ে যাওয়া মেয়েটিকে চুলের মুঠি ধরে টেনে এনে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার শুরু হচ্ছে মার। একই সঙ্গে এক তরুণকেও মারতে দেখা যায়। একই ভাবে। (ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ওই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয়েছিল বিতর্ক। রবিবার রাতেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
শনিবার পুলিশি হেফাজত শেষ হওয়ায় ইসলামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয় তাজিমুলকে। তাঁর আইনজীবী জামিনের আবেদন করেছিলেন। তবে সরকারের তরফে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। একই সঙ্গে তদন্তের স্বার্থে আবারও পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী সঞ্জয় ভাওয়াল।
আদালতে দাবি করা হয়, তাজিমুলকে জেরা করে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা গিয়েছে। তবে তাঁর কাছে আরও অস্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করে পুলিশ। এমনকি, ভিন্রাজ্যের যোগও রয়েছে তাজিমুলের সঙ্গে, এমন দাবিও করা হয়। সরকারি আইনজীবীর দাবি, তদন্তের স্বার্থে তাজিমুলকে ভিন্রাজ্যে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। সেই কারণেই পুলিশি হেফাজতের প্রয়োজন। বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। সঞ্জয় বলেন, ‘‘নতুন করে অস্ত্র আইন যুক্ত করা হয়েছে।’’ ভাইরাল ভিডিয়োকাণ্ডে ইতিমধ্যেই তাজিমুল-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়। আসরে নামে বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। ঘটনায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও। মঙ্গলবার চোপড়ায় নির্যাতিত যুগলের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেই কারণে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন শিলিগুড়িতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চোপড়ায় না গিয়ে শিলিগুড়ি থেকেই ফিরে যান রাজ্যপাল।
চোপড়ার ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমানকে ফোন করে ধমক দেন তিনি। এমনকি, তাঁকে শোকজ়ও করা হয়। একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন যেন কোনও সালিশি সভা না করা হয়। এ ছাড়াও চোপড়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত যদি দলের কোনও পদে থেকে থাকেন, তা হলে যেন অবিলম্বে তাঁকে সেই পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হয়, এমনই নির্দেশ বিধায়ককে দিয়েছিলেন মমতা।