রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি সংগৃহীত।
স্ত্রীকে নির্যাতন, মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগের ঘটনায় রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধৃত শিক্ষক তাপস পালের বাড়িতে তল্লাশি চালাল পুলিশ। তল্লাশির সময়ে পুলিশের সঙ্গে ছিলেন তাপসের স্ত্রী ময়ূরিকা রায়ও। কিন্তু সেই তল্লাশিতে তাপসের বাড়ি থেকে কোনও অলঙ্কার উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শনিবার বিকেলে, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট থানার পুলিশ ময়ূরিকাকে নিয়ে রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর এলাকায় তাপসের বাড়িতে যান। তল্লাশির সময়ে তাপসকে অবশ্য রায়গঞ্জ থানার লক আপে রাখা হয়েছিল। বালুরঘাটের পুলিশ সুপার রাহুল দে বলেন, ‘‘আইনের মধ্যে থেকে সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
তবে, তল্লাশির শুরুতে পুলিশকে সাময়িক বাধার মুখে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ওইদিন ময়ূরিকাকে নিয়ে পুলিশ তাপসের বাড়িতে পৌঁছে দেখেন বাড়ির দরজায় তালা ঝুলছে। তাপসের মা বাড়িতে নেই। বেশ কিছুক্ষণ পরে তাপসের প্রতিবেশী এক আত্মীয় চাবি এনে দরজা খুলে দেন। ময়ূরিকা বলেন, “বিয়ের সময়ে তাপস আমার বাবার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার অলঙ্কার ও আসবাবপত্র নিয়েছিল। আমি পুলিশকে অভিযোগপত্রে সব জানিয়েছি। কিন্তু, তাপস ও তাঁর পরিবারের লোকেরা অলঙ্কারগুলি আত্মসাৎ করায় সেগুলি পুলিশের তল্লাশিতে উদ্ধার হয়নি।’’
ময়ূরিকার দাবি, তিনি তাঁর বাবার বাড়ি থেকে বিয়েতে তাপসকে দেওয়া আসবাবপত্র ফেরত নিতে চাননি। তবে পণ হিসেবে তাপসকে দেওয়া পাথরের চারটি দেবতার মূর্তি তিনি পুলিশের মাধ্যমে বাপের বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন।
তাপস রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের শিক্ষক। বালুরঘাটের চকভবানির রথতলা এলাকায় ময়ূরিকার বাপের বাড়ি। তিনিও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষিকা। ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে তাঁদের বিয়ে হয়। গত ২১ ডিসেম্বর ময়ূরিকা বালুরঘাট থানায় তাপসের বিরুদ্ধে নির্যাতন, মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার রাতে রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের বাড়ি থেকে তাপসকে গ্রেফতার করে বালুরঘাট থানার পুলিশ। এর পর শুক্রবার বালুরঘাট আদালত তাপসকে পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
তাপস অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সব মনগড়া ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। সমাজে শিক্ষক হিসেবে তাঁর সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। আদালতে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমেই সব প্রমাণ হবে।