‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ স্লোগান ও কর্মসূচি মেনে দুর্ঘটনা কমিয়ে ট্রাফিক সচেতনতা বাড়াতে নিয়মিত তদারকির কথা জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের। কিন্তু, সর্বত্র সে কাজ যে ঠিকঠাক হচ্ছে না, তা টের পাচ্ছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
গত এক মাসে রাজ্যে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। তাই খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্বিগ্ন হয়ে কড়াকড়ি বাড়াতে বলেছেন। সরকারি সূত্রের খবর, সেই মতো রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ টানা দু’সপ্তাহ জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে বিশেষ অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সোমবার থেকে সেই বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। দিনরাত অভিযান চলছে। নজরদারির জন্য পালা করে এএসপি, পুলিশ কমিশনাররা তো বটেই, প্রথম সারির অফিসারদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। এই অভিযান চলবে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি অবধি।
এই ক’দিন এসপি থেকে সিপি সহ বাছাই অফিসারদের পালা করে দিনরাত ট্রাফিকের কাজের তদারকি করতে হবে। কবে, কোন অফিসার কোথায় নাকা চেকিং দেখতে যাবেন, সেই তালিকা রাজ্য পুলিশ সদর দফতরে দিতে হবে। রোজ অভিযান সংক্রান্ত রিপোর্ট এডিজি ট্রাফিক এবং এডিজি আইনশৃঙ্খলাকে দিতে হবে। যার ভিত্তিতে জেলা ধরে ধরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ডিজি পদক্ষেপ করবেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ডিজির নির্দেশ মেনে সোমবার দক্ষিণবঙ্গে এডিজি ট্রাফিক নিজে তদারকি করেছেন। উত্তরবঙ্গে ডিআইজি ট্রাফিক সরেজমিনে হাল দেখতে আসরে নেমেছেন। কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে জেলা পুলিশ কর্তারাও ট্রাফিক নিয়ে বৈঠক করে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখেছেন। শিলিগুড়ি ট্রাফিক পুলিশের কর্তারাও রাতে নজরদারির কাজের তদারকি করেছেন।
সোমবার ও মঙ্গলবার রাতে উত্তর দিনাজপুরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুলিশ কর্তারা নেমেছেন।
সেই সময়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও দোকানদারের অভিযোগ করেছেন, জাতীয় সড়কে ট্রাফিক পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিরাপদে দাঁড়ানোর মতো ব্যবস্থা নেই।
ফলে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার মাঝে কিংবা কিনারায় দাঁড়িয়ে ‘সিগন্যাল’ দিতে হয়। তার উপরে বেশির ভাগ সিভিক ভলান্টিয়ার, কনস্টেবলদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নেই বলেও পুলিশ কর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অনেক জেলাতেই একই অভিযোগ শুনছেন পুলিশ কর্তারা। রাজ্য পুলিশের সদর দফতরের এক কর্তা জানান, কাগজে-কলমে অনেক রিপোর্ট মিলেছে।
কিন্তু, এ বার জেলার এসপি-কমিশনারেটের সিপিরা দু’সপ্তাহের অভিযান তদারকি করে যে রিপোর্ট দেবেন তা আগের চেয়ে বেশি প্রামাণ্য হবে। সেই প্রেক্ষাপটে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইভ কর্মসূচিকে আরও সফল করাতে কী পদক্ষেপ দরকার, তা ঠিক করবে রাজ্য।