—প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ির অরবিন্দপল্লির ফ্ল্যাটে সোমা সরকারের খুনের ঘটনায় মোবাইলের সূত্র ধরেই আততায়ীর হদিস পেতে চাইছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, সোমার ‘পরিচিত’ কয়েক জন সন্দেহভাজনের ফোনের তথ্য ঘেঁটে খুনের কিনারা করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নিহতের এক আত্মীয়ও রয়েছেন। শিলিগুড়ি থানার পুলিশের পাশাপাশি, গোয়েন্দা বিভাগের তরফেও ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার গোয়েন্দা বিভাগে পুরো ঘটনা নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। এলাকার সিসি ক্যামেরা থেকে সে ভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। যে কারণে শনিবার সকালে ঘটনার সময় অরবিন্দপল্লিতে ওই আবাসন ও আশপাশের মোবাইল টাওয়ার লোকেশনের সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এ ছাড়া, সোমা সরকারের মোবাইলের কল রেকর্ড খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এডিসিপি শুভেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘নানা দিক দেখে তদন্ত এগোচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঘটনার দিন কয়েক আগে, সোমার সঙ্গে তাঁর এক আত্মীয়ের ঝামেলা হয়েছিল। সম্প্রতি তিনি মৃত বড় মেয়ের সোনার অলঙ্কার বাড়িতে ফেরত নিয়ে এসেছিলেন। তা নিয়ে ওই আত্মীয়ের সঙ্গে সোমার ঝামেলা হয় বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ঘটনার পরে সোমার ছোট মেয়ে ও জামাইয়ের সঙ্গেও কথা বলেছে পুলিশ। পরিচিত বা ঘনিষ্ঠ মহলের কেউ মহিলাকে খুন করেছে বলে পুলিশ মোটামুটি নিশ্চিত। ওই আবাসনে কারও সঙ্গে কোনও গোলমাল হয়েছিল কি না, তা-ও পুলিশ অফিসারেরা দেখছেন। ফ্ল্যাটের অন্য মালিকদের সঙ্গে সোমার সম্পর্ক কেমন ছিল, তা পুলিশ জানার চেষ্টা করছে।
খুনের আগের রাতে, সোমা এক ক্রেতাকে শাড়ি বিক্রি করেছিলেন বলে চাউর হয়। ফ্ল্যাটের নীচের এক ওষুধের দোকানদার ক্রেতাটিকে নিয়ে এসেছিলেন বলে তথ্য সামনে আসে। তিনি সকালে টাকা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন বলে পুলিশ অফিসারেরা নিহতের এক পরিচিতার কাছ থেকে জানতে পারেন। যদিও ওই ওষুধের দোকানদার তা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি। তিনি ফ্ল্যাটে যাননি। রাতে তিনি শুধু সোমাকে ফ্ল্যাটের নীচের গেট বন্ধ করতে দেখেছেন। পুলিশ সে বয়ানও খতিয়ে দেখছে।
তদন্তকারীরা জানান, সোমার ফ্ল্যাটের যে ঘরে বুটিকের শাড়ি রাখা ছিল, সেখানেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। খুনের পরে, পাশের ঘরে দেহ নিয়ে বিছানায় রেখে দেওয়া হয়। অথবা ওই ঘরে গলা বা মুখ চেপে ধরার পরে টেনে পাশের ঘরে এনে শ্বাসরোধও করা হতে পারে। এর পরে, সব ঠিকঠাক করে ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যায় আততায়ী। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, ফরেনসিক পরীক্ষার একাধিক হাতের ছাপের নমুনা ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে। সে ক্ষেত্রে আততায়ী এক জন, না আরও কেউ ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সোমার বুটিকের ব্যবসা বেশ কয়েক মাস ধরে ভালই চলছিল। ফলে, খুনের পিছনে ব্যবাসায়িক কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে।