প্রতীকী ছবি
শনিবার গভীর রাতে দিল্লি থেকে আলিপুরদুয়ারে ফেরেন এক আদিবাসী মহিলা। রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে শামুকতলার একটি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। সেখানে সাফাইকর্মী হিসেবে কাজ করেন মিঠুন পাল। ওই মহিলা তাঁকে শৌচাগার কোন দিকে তা জানতে চান। অভিযোগ, শৌচাগারের কাছে নিয়ে গিয়ে মিঠুন ওই মহিলার যৌন নিগ্রহ করেন। পরের দিন অর্থাৎ, রবিবার সকালে ওই মহিলা শামুকতলা থানায় মিঠুনের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ এ দিন সকালেই মিঠুনকে গ্রেফতার করে।
কিন্তু এর পরে নতুন বিড়ম্বনায় পরে পুলিশ। নিয়ম হল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আদালতে হাজির করাতে হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা সম্ভব নয়। কেন? শামুকতলার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় জানান, ধৃত মিঠুন কোয়রান্টিন কেন্দ্রের কর্মী। ফলে তিনি নিজে করোনায় আক্রান্ত কি না তা জানা নেই। তাই সোমবারেই তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তবেই তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে। বিষয়টি লিখিত ভাবে আদালতকেও জানানো হয়েছে।
ঝক্কি রয়েছে আরও। মিঠুন রয়েছেন শামুকতলা থানার হাজতে। তিনি কোয়রান্টিন কেন্দ্রের কর্মী বলে তাঁর ধারেকাছে ঘেঁষতে চাইছেন না কেউ। পুলিশও কোনও ঝুঁকি নিতে নারাজ। ফলে অন্য মামলায় ধৃতদের ওই থানার হাজতে রাখা যাচ্ছে না। শামুকতলা থানার এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘মিঠুন করোনায় আক্রান্ত কিনা, তা জানা যাবে রিপোর্ট আসার পরে। কিন্তু এখন তো কোনও ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব নয়। তাই বাকি ধৃতদের এই থানায় না রেখে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে পুলিশ ফাঁড়িতে। এমন ঘটনা এই প্রথম দেখছি।’’
তবে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে এমন অভিযোগ ওঠার পরে অস্বস্তিতে প্রশাসন। ওসি জানান, কোয়রান্টিন কেন্দ্রে সিভিক ভলান্টিয়ার্স ছিলই। এই ঘটনার পরে তাঁদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব দ্রুতই মিঠুনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার কথা। তা নেগেটিভ এলেই তাঁকে আদালতে পাঠানো হবে।
পজ়িটিভ এলে? স্যানিটাইজ়ার হাত ঘষে এক পুলিশের জবাব, ‘‘সঙ্গে সঙ্গে কোভিড হাসপাতালে। তার পরে যা হওয়ার হবে!’’