স্কুটি নিয়ে পড়ে গিয়েছে এক ব্যক্তি। খাণা-খন্দে ভরা ফুলেশ্বরী রেলগেটে তোলা ছবি। ছবিঃ স্বরূপ সরকার।
গত কয়েক মাস ধরে শিলিগুড়ির ফুলেশ্বরী মোড়ের রেলগেট যেন এলাকার বাসিন্দাদের কাছে মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় ব্যবসায়ী থেকে বাসিন্দারা জানান, রেলগেটের লাইনের উপর কমবেশি ১৫-২০টি দুর্ঘটনা ঘটছে। মূলত, রেলগেটের লাইনের দু’পাশের অ্যাপ্রোচ রোড থেকে লাইনের ধারে পেতে দেওয়া পাথরের ব্লকের উচ্চতা বেশি হওয়ায় পথ চলতি মানুষেরা সমস্যা পড়েন। একাধিক জায়গায় এক ফুটের মত উঁচুনিচু গর্তে গাড়ির চাকা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গেটের পাশে একটি আন্ডারপাস থাকলেও সেটি নোংরা জলে ভরে থাকে। তাই বেশিরভাগ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রেলগেট দিয়েই লাইন পারাপার করেন। রেলগেটটি শিলিগুড়ি শহরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফুলেশ্বরী বাজারের মধ্যে রয়েছে। একটি ‘ন্যারো গেজ’ আর একটি ‘ব্রড গেজ’ লাইন মিলিয়ে এই গেটে দু’টি রেললাইন রয়েছে। পাশে গেটম্যানের ঘর।
এলাকায় বাড়ি শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ থেকে শুরু করে তৃণমূলের পুরসভার চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তীর। শঙ্কর বলেন, ‘‘সমস্যার কথা জানি। এক দফায় রেলের লোকজনকে ডেকে পরিস্থিতি দেখানো হয়।’’ আর তৃণমূলের চেয়ারম্যানের কথায়, ‘‘রেলের গাফিলতিতে রোজ দুর্ঘটনা ঘটছে।’’
রেলগেটের পাশেই ফুলেশ্বরী বাজার। বিরাট বাজার এলাকায় আবার ইন্ডোর স্টেডিয়াম রয়েছে। এলাকার একাধিক রাস্তা দিয়ে এনজেপি স্টেশনে যাওয়া যায়। সুভাষপল্লি, হাকিমপাড়া, ডাবগ্রামের দিক থেকে ট্রেনের যাত্রীরা রেলগেটের রাস্তাই ব্যবহার করেন। সম্প্রতি এলাকার এক যুবক রেলগেটের ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে পরিস্থিতির কথাও জানান। শিলিগুড়ির মতো কর্পোরেশন-শহরের এমন হাল দেখে, অনেকে আন্ডারপাস ব্যবহারের পরামর্শও দেন। বাসিন্দাদের বক্তব্য, গেটটি চালু রেখেছে রেল। তা হলে সেটি ঠিক ভাবে চলাচলের যোগ্য রাখা হবে না কেন?
কিছু দিন আগে এক মহিলা স্কুটার থেকে লাইনের উপর পড়ে মাথায় চোট পান। তা দেখার পরে রেলের এডিআরএমকে বিস্তারিত জানিয়ে অভিযোগ জানান পর্যটন সংগঠনের কর্তা তথা স্থানীয় বাসিন্দা সম্রাট সান্যালও। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত ব্যবস্থা দরকার।’’ ফুলেশ্বরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির অন্যতম কর্তা বাসু শিকদার বলেন, ‘‘রেলের কোনও উচ্চবাচ্য নেই। মেরামত না হলে, গেটটি রেল বন্ধ করে দিক।’’
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সব্যসাচী দে বলেন, "বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।"