Crime Against Women

যে কোনও ঘটনাকে ‘উন্মত্ততা’য় পরিণত করা অশিষ্টতা

থানা ভাঙচুরের মতো সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি করছি আমরা, তা সাধারণ মানুষের বোঝা উচিত। সরকারি পরিকাঠামো আমার-আপনার করের টাকায় তৈরি হয়।

Advertisement

মমতা কুণ্ড

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

প্রিয়াঙ্কার বাবা শোকার্ত। নিজস্ব চিত্র

শান্তিপ্রিয় এলাকা হিসেবে কালিয়াগঞ্জ শহরকে সকলেই চেনেন বা জানেন। সেই শান্ত কালিয়াগঞ্জ আজ যেন ‘অগ্নিগর্ভ’ হয়ে উঠেছে। মৃতদেহের সঙ্গে পুলিশের অমানবিক আচরণ, থানা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, পুলিশকে মারধর, এমনকি পুলিশের গুলিতে সাধারণ গ্রামবাসীর মৃত্যুতে আজ সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে এই জনপদের নাম। এমন কালিয়াগঞ্জকে আজ আমার বড় অচেনা মনে হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান হিসেবে পরিচিত কালিয়াগঞ্জ। সংস্কৃতির চর্চার নানান দিক উন্মোচনের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার সম্ভাবনা এই মাটিতে। এক সময় সংস্কৃতি চর্চায় ব্যাপৃত কালিয়াগঞ্জ আজ ‘রক্তাক্ত’। কালিয়াগঞ্জের পরিবেশ দিন দিন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।এমন ঘটনা কখনওই কাম্য নয় কারও কাছেই।

Advertisement

থানা ভাঙচুরের মতো সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করে আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি করছি আমরা, তা সাধারণ মানুষের বোঝা উচিত। সরকারি পরিকাঠামো আমার-আপনার করের টাকায় তৈরি হয়। তা ভাঙলে ক্ষতি সকলের, এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সচেতন হওয়া দরকার। আন্দোলনকারীদের হাতে পুলিশকর্মীদের মারধরের ঘটনায় নিচু স্তরের পুলিশ কর্মীদের মনোবল অনেকটাই ভেঙে যাবে বলে আমি মনে করি। যাঁরা নিরাপত্তা দেবেন, তাঁরাই যদি ভয়ে ও আতঙ্কে থাকেন, তা হলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন-চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে। প্রথম দিন থেকে কালিয়াগঞ্জে যা যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের অমানবিক আচরণ ও ধরপাকড় করতে গিয়ে এক জন সাধারণ গ্রামবাসীর মৃত্যু কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসন এ ব্যাপারে অতি সক্রিয় না হলেই ভাল হত।অস্থিরতা কাটিয়ে কালিয়াগঞ্জের মানুষ আবার শান্তি বসবাস করুন এটাই কামনা করি।

কালিয়াগঞ্জে শান্তি ফেরাতে প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। প্রশাসনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। মনে রাখতে হবে, যে কোনও ঘটনাই ঘটুক না কেন, সেটা নিয়ে সমাজে উন্মত্ততা ছড়ানো অশিষ্টতারই নামান্তর। এটা সবাইকেই খেয়াল রাখাতে হবে। এটা শুধু আমার শহর বলে নয়, রাজ্যের সর্বত্রই সাধারণ মানুষকে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সচেতন হতে হবে, বিবেচনাবোধকে জাগ্রত রাখতে হবে। পাশাপাশি, প্রশাসনেরও সব ঘটনার মোকাবিলার ক্ষেত্রেই সুসামঞ্জস্যপূর্ণ দায়িত্ববোধ থাকবে— এটাই আশা করি। তা হলে আর সামান্য ঘটনা নিয়ে হানাহানির পরিস্থিতিও তৈরি হবে না।

Advertisement

(প্রাক্তন শিক্ষিকা, কালিয়াগঞ্জ কলেজ, ‘বঙ্গরত্ন’ প্রাপক)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement