তখন মোবাইল জ্বালিয়ে চলছে চিকিৎসা। —নিজস্ব চিত্র।
মোবাইলের ফ্ল্যাশ আলো জ্বালিয়ে চলছে আহত রোগীর সেলাই এবং ইঞ্জেকশন দেওয়া। ধূপগুড়ির হাসপাতালে ধরা পড়ল এই ছবি। আচমকা লোডশেডিং হতেই বিপাকে পড়েন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্মীরা। সেই সময় ওই বিভাগে দুর্ঘটনায় আহত এক রোগীর সেলাই করছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আচমকা অন্ধকারে ছেয়ে যায় ঘর। অগত্যা আহতের সঙ্গীরাই মোবাইলের ফ্ল্যাশ আলো জ্বালিয়ে দেন চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে হাসপাতালে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই বলেই জানিয়েছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক।
সোমবার ধূপগুড়ির লালস্কুল এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় আহত হন দুই যুবক। তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। আহতদের মধ্যে এক জনের থুতনি ফেটে গিয়েছিল। পরিস্থিতি দেখে সেলাই করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। সেলাই চলাকালীন আচমকা লোডশেডিং হয়ে যায়। অভিযোগ, আলো জ্বালানোর বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় আহত যুবকের সঙ্গে থাকা অন্যেরা মোবাইলের আলো জ্বালেন। সেই আলোতেই হয় আহত যুবকের সেলাই। দুর্ঘটনায় আহত যুবকের বন্ধু আশানন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘ঝুমুর এলাকায় মোটরবাইকে দুর্ঘটনায় পড়ে আমার দুই বন্ধু। ওরা জখম হয়েছিল। হাসপাতালে এক বন্ধুর থুতনিতে সেলাই করা হচ্ছিল। সেই সময় আচমকা বিদ্যুৎবিভ্রাট দেখা দেয়। অন্ধকারে ঢেকে যায় হাসপাতাল। কিন্তু কোনও বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। তাই আমরা মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে দিই। এর পরেই সেলাই করা শেষ হয়। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কাও রয়েছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে এ ভাবে চিকিৎসা হয়, এটা ভেবেই অবাক হচ্ছি।’’
বিষয়টি নিয়ে দেবদাস মণ্ডল নামে এক কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমি ইনডোরে রোগী দেখাতে ব্যস্ত ছিলাম। জরুরি বিভাগে কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।’’ যদিও এই বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ ঘোষ ফোনে বলেছেন, ‘‘হাসপাতালে লোডশেডিং হলে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। মাঝে মধ্যে লোডশেডিং হয়। তবে জেনারেটরের আলোতেই সব কাজ করা হয়। লোডশেডিং হওয়ায় এবং জেনারেটর চালু করার মাঝের ওই সামান্য সময়ে হয়তো মোবাইল জ্বালিয়ে কাজ করা হয়েছে। তবে হাসপাতালে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই।’’