প্রার্থনা: বৃষ্টি চেয়ে নমাজ ও দোয়া। সোমবার চাকুলিয়ার ইদগাহ ময়দানে। নিজস্ব চিত্র
আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস শুরু হল। তবুও বৃষ্টিহীন বর্ষা। দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বৃষ্টির দেখা মিলছে না। তাই সোমবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের চাকুলিয়ায় ইদগাহ ময়দানে খোলা আকাশের নীচে এলাকার কয়েকশো বাসিন্দা জড়ো হয়ে ‘আল্লাহর’ কাছে সমবেতভাবে বৃষ্টি প্রার্থনা করলেন। এ দিন আবহবিদেরা জানান, ওড়িশার নিম্নচাপ অক্ষরেখার টানে মৌসুমী অক্ষরেখার পূর্ব প্রান্ত দক্ষিণবঙ্গের দিকে সরে গিয়েছে। তার কারণে, উত্তরবঙ্গের বৃষ্টিপাত কমেছে। তবে ওড়িশার নিম্নচাপ অক্ষরেখা দুর্বল হয়ে পড়েছে। আজ, মঙ্গলবার থেকে এই জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলায় ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
মাঝেমধ্যে আকাশে কালো মেঘ ভেসে বেড়ালেও বৃষ্টি হচ্ছে না। তার ফলে উত্তর দিনাজপুরের বেশিরভাগ খাল, বিল, নদীনালা শুকিয়ে গিয়েছে। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকেরাও। আমনের চারা রোপণের উপযুক্ত সময় এখন। কিন্তু এ বার বর্ষার শুরু থেকেই স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা পাচ্ছেন না বলে কৃষকেরা জানালেন। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় খেতে সেচ দিতে কৃষকের বাড়তি খরচ হচ্ছে। ঠিক মতো বৃষ্টি না হলে আবার খেতে আগাছা, রোগ ও পোকার আক্রমণ বেড়ে যাবে। এতে ধানের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আবার খাল, বিলের জল শুকিয়ে যাওয়ায় পাট পচানো নিয়েও বিপাকে পড়েছেন অনেক পাটচাষি। তাই বৃষ্টি চেয়ে এ দিন সকালে নমাজ পড়লেন এলাকাবাসী। সকলেরই প্রা্র্থনা, আল্লাহ যেন দ্রুত প্রচুর বৃষ্টি দেন।
এ দিন সকাল ৬টার সময় নমাজ শুরু হয়। এক ঘণ্টা ধরে চলে প্রার্থনা। স্থানীয় শিক্ষক আলাউদ্দিন খান বলেন, ‘‘বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠের বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সকলে সমবেত হয়ে তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করলাম— যেন দ্রুত তিনি বৃষ্টি দেন।’’
এ দিন নমাজ পড়ান স্থানীয় ইমাম মুক্তার আলম। তিনি বলেন, ‘‘এই নমাজকে ইস্তেখারার নমাজ বলে।’’
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘আজ, মঙ্গলবার থেকে গৌড়বঙ্গের তিন জেলায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। নিম্নচাপ অক্ষরেখা রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। নিম্নচাপের ফলে দুই দিনাজপুর এবং মালদহে আগামী দু’-তিন দিন বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’’