নিজস্ব চিত্র
১২ বছরের ছেলেটা পড়াশোনায় ভাল। আর তাকেই কি না জালনোট পাচারাকারী হিসাবে ধরল পুলিশ? বিস্ময়ের ঘোর এখনও কাটছে না কালিয়াচকের শাহবাজপুর এলাকার বাসিন্দাদের। কেউ ঘূণাক্ষরেও টেন পাননি এমন চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে ওই ছাত্র। তদন্তে নেমে আশঙ্কা বাড়ছে পুলিশেরও। কারণ, পুলিশ এত দিন জানত ওই অঞ্চলে জাল নোট পাচারকারীদের নানা ঘাঁটি রয়েছে। কিন্তু পাচারের কাজে এর আগে স্কুল পড়ুয়াদের ব্যবহার করা হয়নি। সোমবারের পর থেকে তাই গ্রামের অভিভাবকরা ভাবছেন, তাঁদের বাড়ির ছোট্ট ছেলেটাকেও লোভ দেখিয়ে নিজেদের দলে টেনে নেয়নি তো পাচারকারীরা!
শাহবাজপুর গ্রামপঞ্চায়েতের সদস্য তথা ধৃতের প্রতিবেশী আলাউদ্দিন শেখ বলেছেন, ‘‘আশঙ্কায় রয়েছি। ধৃত আমার ছেলেরও বন্ধু। মাঝে মাঝে বাড়িতে আসত। ও ফাঁদে পা দিয়েছে। ভয় আমার ছেলেকে নিয়ে। ওকেও দলে ভিড়িয়ে নেয়নি তো?’’ স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আতিউর রহমান আলাউদ্দিনের আশঙ্কায় সায় দিয়েছেন। বলেছেন, ‘‘যে ভাবে এলাকার এক ছাত্র জালনোটের কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। তাতে মনে হয়, ও একা না, অন্য অনেক পড়ুয়াই এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারে। অস্বাভাবিক নয় সেই ঘটনা।’’ গ্রামের অন্য এক অভিভাবকের কথাতেও উঠে এসেছে সেই আশঙ্কার কথা। তিনি বলেন, ‘‘আমার ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। একাই স্কুলে যায়, টিউশনিতেও। পথে নানা লোকের সঙ্গে দেখা হয়, কথাও হয়। ওকেও পাচারকারীরা লোভ দেখিয়ে দলে টেনে নিয়েছে কি না, সেই প্রশ্নই দিনরাত মাথার মধ্যে ঘুরছে।’’
ঘটনার তদন্তকারী অফিসারের মতে, এলাকায় ধৃত ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র শুধু নয়, আরও কয়েক জন পড়ুয়ারও এর মধ্যে জড়িয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, পড়ুয়াদের হঠাৎ করে টাকার লোভ দেখানো সোজা। পাশাপাশি স্কুলের ছাত্রকে হঠাৎ করে পাচারকারী বলে কেউ সন্দেহ করবে না। সেই কারণেই জাল নোটের কারবারীদের সুবিধাজনক বাহক হয়ে উঠছে স্কুল পড়ুয়ারা। পুলিশ সূত্রে খবর, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের উপর নজর রাখার ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে।
ধৃত স্কুল পড়ুয়ার বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছে, জাল নোটগুলি বৈষ্ণবনগর থানার অন্তগর্ত শোভাপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে এসেছে। গঙ্গায় নৌকাপথে বাংলাদেশ থেকে জাল নোটগুলি ভারতে ঢুকেছে। কোনও পরিচিতই তাকে এই জাল নোটগুলি দিয়েছিল মনে করছেন তদন্তকারীরা।